ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

‘ঈদের আগে বেতন-বোনাস পরিশোধের আহ্বান ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:১৮ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২৪ সোমবার

‘আসন্ন ঈদুল ফিতরে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস যথাসময়ে পরিশোধ করার অনুরোধ জানিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাহাবুবর রহমান। আজ সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানী উত্তরাস্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের কার্যালয়ে আয়োজিত মনবিনিময় সভার পর এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজেএমইএ, বিকেএমইএ,  বিটিএমএ ও ডিআইএফইসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ প্রধান বলেন, ঈদের আগে কোনো গার্মেন্টসেরর মালিক বেতন-ভাতা দিতে ব্যর্থ হলে বিকল্প কোনো উপায় বের করার জন্য মালিক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। সম্ভাব্য গোলযোগ হতে পারে—গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনা করে এরকম কারখানা শনাক্ত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মালিক, পুলিশ প্রশাসন—কার কি করণীয় সেটাও নির্ধারণ করা হয়েছে। ঈদের আগে যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কোনো অবস্থাতেই শ্রমিক ছাটাই বা লে—অফ না করা হয়, এ ব্যাপারে মালিক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আসন্ন ইদুল ফিতর উপলক্ষে বিভিন্ন শিল্প—কলকারখানায় কোনো রকম আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পবনতি না ঘটে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। বৈঠকে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছি। কোন কোন কানখানায় সমস্যা হতে পারে এগুলো গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পর্যালোচনা করা হয়েছে।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ প্রধান আরও বলেন, মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে ঈদের বোনাস যেন এপ্রিলের শুরুতে দেয়া হয়। ঈদের ছুটির আগেই যেন মার্চ মাসের বেতন দেয়া হয়। মালিক ও শ্রমিকদের বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ঈদের ছুটি যেন পর্যায়ক্রমে দেয়া হয় সে অনুরোধ করা হয়েছে। ঈদুল ফিতরে শ্রমিকদের বেতন-ভাতাকে কেন্দ্র করে কোনো অপশক্তি যেন আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটাতে না পারে— এ বিষয়ে গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করে সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য সকলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ঈদের আগে অনেক শ্রমিক সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন। এটির সমাধানে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এমন প্রশ্নের জবাবেব ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ প্রধান মাহাবুবর রহমান বলেন, মালিক কর্তৃপক্ষ হয়তো অসমর্থ হওয়ার কারণে শ্রমিকরা সড়কে নেমে আসে। এসব ক্ষেত্রে বিএজএমঅইএ ও বিএকএমঅইএ পুলিশকে সহয়তা করে। অনেক ক্ষেত্রে এক কারখানায় যন্ত্রপাতি অন্য কারখানা মালিক কিনে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দিয়েছে।

ঈদের ছুটির সময় ফাঁকা কল কারখানা অধ্যুষিত এলাকায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের বিশেষ টহল ডিউটির অবস্থা থাকবে। ঈদের ৭ দিন আগে থেকে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম ও হট লাইন সচল থাকবে (০১৩২০—১৭০০৯৮)।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সংকট অনেক বেশি, নানা রকমের সংকটে এখন কারখানা আবর্তিত। ব্যাংকের সঙ্গে নানা রকম সংকট, আন্তর্জাতিক মার্কেটে অর্ডার কম, রপ্তানি কম এমন নানা র সংকট রয়েছে। এদিকে আমাদের সবকিছুরই মূল্য বেড়েছে। গ্যাসের মূল্য বেড়েছে, গ্যাস ঠিকমতো পাওয়া যায় না। এ কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। উৎপাদন ব্যাহত মানে নির্ধারিত সময়ে টাকা না পেলে বেতন—বোনাস দিতে সমস্যা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ইনসেন্টিভের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এই টাকা যদি ঈদের আগে পায় তবে শ্রমিকদের বেতন—বোনাস দেওয়া সহজ হবে।

বিজেএমইএর সহ সভাপতি আব্দুল্লাহ হীল রাকিবকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ২০২৪ আমাদের জন্য আরও কঠিন একটা বছর। অনেকেই হয়তো এটি দেখতে পাচ্ছেন না, বর্তমানে ভালো কারখানার মালিকও ভোগান্তিতে পড়ছে। একটা কারখানার মালিক কোনোভাবেই বেতন বা বোনাস বাকি রাখে না।