আইএসআইকে সন্তুষ্ট করতে রাজাকারের সন্তানরা ভারতবিরোধিতা করছে : নানক
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৪০ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২৪ সোমবার | আপডেট: ০৮:৪১ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২৪ সোমবার
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, রিজভী সাহেবের বাবা ছিলেন পাকিস্তান পুলিশে কর্মরত। পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। আরেকজন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর; যার বাবা চোখা মিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় চোখা রাজাকার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। সেই চোখা রাজাকারের ছেলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা তো অবশ্যই পাকিস্তানিদের আইএসআইকে সন্তুষ্ট করার জন্য ভারতবিরোধীতার জিকির তুলবেন; এটি তো তাদের পুরনো খাসিলত।
সোমবার বিকেলে সিরডাপ মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশের উদ্যোগে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন নানক।
নানক বলেন, এই গণহত্যার স্বীকৃতি খোদ পাকিস্তান সরকার কর্তৃক প্রকাশিত দলিলে রয়েছে। পুরো পাকিস্তানের সংকট সম্পর্কে যে শ্বেতপত্র পাকিস্তান সরকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রকাশ করেছিল তাতে বলা হয় ১৯৭১ সালে ১ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পযন্ত ১ লাখেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ ৫৩ বছর পেরিয়ে গেছে। আমরা আজও তারস্বরে চিৎকার করছি আমরা গণহত্যার স্বীকৃতি চাই। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যা করে, কারাগারের অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত আমাদের পবিত্র সংবিধানকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তারা হত্যা করেছে। আমার ধর্মনিরপেক্ষতাকে হত্যা করে। আমাদের গণতন্ত্র সামরিক ছাউনিতে বন্দী হয়ে যায়। এই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের লড়াই করতে হয়েছে।
কোন বাংলাদেশে লড়াই করতে হয়েছে? প্রশ্ন তুলে নানক বলেন, যে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী খুনি ডালিম, শাহরিয়ার, নূর, মোশতাকরা বিচরণ করেছে। সেই বাংলাদেশে আমাদের গণতন্ত্রের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লড়াই করতে হয়েছে। যে বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পরাজিত হয়েছিল, সেই মানবতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। কারণ জিয়াউর রহমান তাদেরকে পুনর্বাসন করেছিল।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এই বাংলাদেশটি দীর্ঘ ২১ বছর যাবৎ উল্টো পথে চলেছে। এই বাংলাদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। এই দেশ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। এই বাংলাদেশে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ভাষণের রেকর্ড তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই ভাষণ আমরা যারা বাজানোর চেষ্টা করেছি, আমাদেরকে পুলিশ পিটিয়েছে, অত্যাচার করেছে ,গ্রেফতার করেছে। এই তো ছিল ২১ বছরের বাংলাদেশ!
সেই বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই বাঙালি জাতি ভোট ও ভাতের অধিকারের আন্দোলন করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। তাই আজকের প্রজন্ম এই বাংলাদেশের স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে বলে দাবি করেন তিনি।
গণহত্যা দিবস পালন না করার জন্য বিএনপির সমালোচনা করে নানক বলেন, আজকে ২৫ মার্চ, বিএনপি সমাবেশ করে। কিন্তু সেই সমাবেশে বসে তারা ২৫ মার্চকে স্মরণ করে না। কিভাবে স্মরণ করবে? ২৫ মার্চ যারা স্মরণ করবে? সেই রিজভী সাহেবের বাবা ছিলেন রাজাকার। রিজভী সাহেবের বাবা ছিলেন পাকিস্তান পুলিশে কর্মরত। পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। আরেকজন হলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর; যার বাবা চোখা মিয়া যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় চোখা রাজাকার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। সেই চোখা রাজাকারের ছেলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা তো অবশ্যই পাকিস্তানিদের আইএসআইকে সন্তুষ্ট করার জন্য ভারতবিরোধীতার জিকির তুলবেন; এটি তো তাদের পুরনো অভ্যাস, পুরনো খাসিলত।
গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে সম্প্রীতি বাংলাদেশকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে জাগরণ সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, এই গণহত্যার স্বীকৃতি আদায় করতে হলে শুধু আমাদের দেশে নয় আন্তর্জাতিকভাবে সমস্ত বাঙালিদের মাঝে জাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। বাইরে অবস্থানরত বাঙালিদেরও এই দিবসটি পালনের জন্য সচেতন করতে হবে। আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা, রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছিলাম এখনো বেঁচে আছি। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস স্বীকৃতি হিসেবে লাভ করলে আত্মতৃপ্তি নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারতাম।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের সভাপতি পীযূস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব ড. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।
কেআই//