ঈদে ঘরমুখো মানুষকে যেসব পরামর্শ দিল ডিএমপি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৪৪ পিএম, ৫ এপ্রিল ২০২৪ শুক্রবার | আপডেট: ০৯:৩৫ এএম, ৬ এপ্রিল ২০২৪ শনিবার
ঈদ উদযাপন করতে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রামের যাবেন অধিকাংশ নগরবাসী। এর ফলে ফাঁকা হয়ে যায় রাজধানী। ইতোমধ্যে ঢাকা ছাড়তে শুরুও করেছে ঘরমুখী এসব মানুষ। শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে মসজিদে মসজিদে খুতবা পাঠের পূর্বে ঢাকা ছাড়ার আগে নগরবাসীকে বেশ কিছু পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যা মেনে চলার অনুরোধ করছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
বিকেলে ডিএমপির উপকমিশনার (ক্রাইম) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে ঢাকা মহানগরবাসীকে সচেতন করার জন্য প্রতিটি মসজিদে খুতবার আগে থানার ওসি থেকে শুরু করে অফিসাররা পরামর্শ পড়ে শুনিয়েছেন।
ডিএমপি কমিশনারের পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো :
১. গ্যাসের ও পানির লাইনসহ সব ধরনের লাইট, ফ্যানের সুইচ, বৈদ্যুতিক প্লাগ বন্ধ করে বাসা থেকে বের হবেন। বাসা বাড়িতে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে ছুটি শেষে বাড়ি থেকে ফিরে এসে দরজা-জানালা খুলবেন। ঘরে জমে থাকা গ্যাস বের না হওয়া পর্যন্ত কোনো অবস্থাতেই গ্যাসের চুলা জ্বালানো কিংবা বৈদ্যুতিক সুইচ অন করবে না।
২. বাসা-বাড়িতে সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে। পূর্বে বসানো সিসি ক্যামেরা সচল আছে কিনা পরীক্ষা করতে হবে।
৩. বাসার চারপাশে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৪. নগদ টাকা কিংবা স্বর্ণালংকার ব্যাংক কিংবা নিকটাত্মীয়দের কাছে নিরাপদে রেখে যাবেন।
৫. রাতে কিংবা দিনে একসঙ্গে মুখে মাস্ক এবং মাথায় ক্যাপ পরিহিত অপরিচিত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গতিবিধি নজরদারি করতে হবে। প্রয়োজনে ৯৯৯ ফোন দিতে হবে।
৬. মোটরসাইকেল চুরি রোধে এলার্ম লাগাতে হবে। এতে কেউ মোটরসাইকেল স্পর্শ করলেই এলার্ম বেজে উঠবে। লক করার কাজে স্টিলের তৈরি মেরিন এংকর চেইন ব্যবহার করতে হবে। মোটরসাইকেলে জিপিএস ট্র্যাকার লাগাতে হবে এবং চাকাতে উন্নত মানের ডিস্ক লক ব্যবহার করতে হবে।
৭. দেশের কিংবা বিদেশের কোন আইপিএস কিংবা বিসিএস কর্মকর্তা, সেনা কর্মকর্তা ইত্যাদি পরিচয়ে ফেসবুকে পাঠানো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করলে প্রতারিত কিংবা ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার হতে পারেন। সেজন্য এ ধরনের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করা উচিত হবে না।
৮. যার নাম ঠিকানা আপনার জানা নেই এমন অপরিচিত ব্যক্তির দেওয়া ভিডিও কল গ্রহণ করবেন না। এরূপ ভিডিও কলে পাঠানো অশ্লীল ছবি কিংবা ভিডিও রেকর্ড করে আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করতে পারে।
৯. আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কিংবা বিকাশ বা নগদ অ্যাকাউন্ট কোন ব্যক্তি বন্ধ করতে পারে না। এসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার ভয় দেখিয়ে আপনার কাছ থেকে অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড কিংবা পিন নাম্বার বিভিন্ন কৌশলে বারবার চাইতে পারে। এ ধরনের ফোন কল পেয়ে কোন অবস্থাতেই পাসওয়ার্ড কিংবা পিন কোড দেয়া যাবে না।
১০. ভুল করে আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে- এমন ফোন কল পেলে যাচাই না করে বিশ্বাস করবেন না।
১১. লটারি জিতেছেন কিংবা বিদেশ থেকে দামি উপহার কিংবা ডলার পাঠানো হবে এরূপ মোবাইল কল পেয়ে বিশ্বাস করবেন না। এয়ারপোর্ট কাস্টমসে কিংবা এনবিআর অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকা পরিশোধ করতে হবে জানিয়ে প্রতারকরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। কোন অবস্থাতেই এ ধরনের লোভে পড়বেন না।
১২. অত্যন্ত দামি ধাতুর তৈরি সীমান্ত পিলার এ বিনিয়োগ করে কোটি কোটি টাকা লাভ করা যাবে এরূপ প্রলোভনে বিশ্বাস করবেন না। প্রতারকরা নকল পিলার দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। বাস্তবে এ ধরনের কোনো পিলার নেই।
১৩. ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়্যাটঅ্যাপ ও ইমো আইডিতে আত্মীয়, বন্ধু কিংবা পরিচিত ব্যক্তির বিপদে পড়ে জরুরি টাকা পাঠানোর অনুরোধ পেলে তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ না করে টাকা পাঠাবেন না। মোবাইল চুরি করে কিংবা বিভিন্ন আইডি হ্যাক করে এ ধরনের অনুরোধ পাঠানো হয়।
১৪. সস্তায় হোটেল ভাড়া করা, বিমানের টিকেট কাটা কিংবা কম খরচে ইউরোপ ও কানাডা কিংবা আমেরিকায় পাঠানোর প্রস্তাব কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট কিংবা অ্যাপসে পাঠালে বিশ্বাস করবেন না।
কেআই//