যুক্তরাষ্ট্রে তুলার পোশাকে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা চায় বাংলাদেশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৫১ এএম, ২২ এপ্রিল ২০২৪ সোমবার
যুক্তরাষ্ট্রের তুলা থেকে তৈরি বাংলাদেশি পোশাকের জন্য শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা প্রদানের অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে পোশাকের বাইরে অন্যান্য সম্ভাবনাময় পণ্য যেমন ওষুধ, সিরামিকসহ বেশ কিছু পণ্য রপ্তানির সুযোগ এবং ওষুধ রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করার দাবি করেছে বাংলাদেশ।
রোববার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম অ্যাগ্রিমেন্ট (টিকফা)র অন্তবর্তী বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব দাবি উত্থাপন করা হয়।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প এখন অনেক বেশি কমপ্লায়েন্ট। এখানে পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকরা দরিদ্র জনগোষ্ঠির, তাদের জীবমান উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র যদি অবদান রাখতে চায় তাহলে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান করতে পারে।
তিনি বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধান অনুসারে আফ্রিকার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পণ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র শুল্কমুক্ত সুবিধা বহাল রেখেছে। তাহলে বাংলাদেশসহ এশিয়ার দেশগুলো কেন পাবে না। আমরা ইতোমধ্যে শ্রম পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি করেছি এবং আইনী সংস্কার আনা হয়েছে।
সিনিয়র সচিব বলেন, সার্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশী পোশাক পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাওয়ার যোগ্য বলে আমরা যুক্তি উপস্থাপন করেছি।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আমরা প্রযুক্তি সহায়তা চেয়েছি-যার মাধ্যমে কৃষিসহ অন্যান্য পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতি করতে পারি। একই সঙ্গে কৃষিপণ্য রপ্তানির জন্য স্ট্যান্ডার্ড সার্টিফিকেশন এবং প্রয়োজনীয় এ্যাক্রিডিটেশন নিশ্চিতকল্পে সহায়তা চেয়েছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তপন কান্তি ঘোষ জানান, বৈঠকে শ্রমনীতি এবং মানবাধিকারের বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি।
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতির অধিক উন্নতির জন্য সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে ১১ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেছে। এছাড়া তারা মেধাস্বত্ত্ব আইনের যথাযথ প্রয়োগ করার অনুরোধ জানিয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ফ্যাসালিটিজ-এর আওতায় আর্থিক সহায়তা প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে তুলা রপ্তানি বাড়াতে আগ্রহী। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে তুলা আমদানিতে ডাবল ফিউমিগেশন পদ্ধতি বাতিল করেছে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি অনেক বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, দুই বছর আগে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের তুলার বাজারের হিস্যা ছিল ৯ শতাংশ। ডাবল ফিউমিগেশন পদ্ধতি বাতিল করার পর এখন তা বেড়ে প্রায় ১৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
এমতাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত তুলা ব্যবহার করে বাংলাদেশে উৎপাদিত আরএমজি পণ্যগুলোতে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ।
এএইচ