ছেঁড়াফাটা নোট গ্রহণে অনীহা, প্রভাব পড়েছে বেচাকেনায়
অখিল পোদ্দার
প্রকাশিত : ১১:১১ এএম, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ শুক্রবার
ছেঁড়াফাটা নোট গ্রহণে অনীহা বেড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার। যার প্রভাব পড়েছে নিত্যকার বেচাকেনায়। ভূক্তভোগীরা বলছেন, বাজার করতে গিয়ে টাকা চালাতে পারবেন কি-না তা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয় তাদের।
নতুন টাকা কতোদিন আর নতুন থাকে? কিছুদিন যেতে না যেতেই টাকার এদিক-সেদিক চিড় ধরে। স্ট্যাপলার কিংবা ভোমরের ছিদ্র, রক্তের দাগ, কলমের কালি কিংবা হিসাব নিকাশ লেখার কারণে কিছুদিন যেতেই নেতিয়ে পড়ে টাকার বান্ডিল।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, কোনো টাকার মধ্যে যদি রঙ থাকে, কোনা ছিড়া থাকে বা আগুনের ফোটা থাকে- ওইসব টাকা আড়ৎদাররা নিতে চায় না। তখন আমরা বিপাকে পড়ে যাই, তখন টাকাটা অচল হিসেবে থেকে যায়।
আরেকজন জানান, কিছু কিছু হকার আসে ছেঁড়া টাকা নেয়ার জন্য। যদি টাকাটা বেশি ছেঁড়া হয় তাহলে ৫০ শতাংশ ছাড়। আর যদি কম ছেঁড়া হয় তাহলে ১০-২০ টাকা কমিশন রেখে বাকি টাকাটা ফেরত দিয়ে দেয়। ৫শ’ টাকা যদি ছেঁড়া আসে তাহলে নিতে হবে ৩৫০ টাকা।
তফসিলি ব্যাংকের শাখাগুলোতে এসব নোট ফেরত নেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেখান থেকেও ফেরানো হচ্ছে। ফলে ছেঁড়া কাটা কিংবা পুরোনো হলেই বাজারে চলছে না এসব টাকা।
সাধারণ গ্রহাকরা জানান, টাকা চলবেনা বলে টাকা নিতে চায়না। তবে ব্যবসায়ীরা জানান, ওইসব টাকা কোম্পানি নিতে চায়না ফলে আমরা ওইসব টাকা বাট্টা দিয়ে চালিয়ে দেই।
এক ভুক্তভোগী জানান, ছেঁড়া ১২০ টাকা দিয়ে ৬০ টাকা পেয়েছি।
কেনো কী কারণে ছেঁড়া কাটা কিংবা পুরোনো টাকা লেনদেনে অনীহা ক্রেতা কিংবা বিক্রেতার তার উত্তর নেই কারও কাছেই।
ছেঁড়া টাকার এক ব্যবসায়ী জানান, সবাই তো ব্যাংকের প্রক্রিয়া বুঝেনা, জমা দিতে সাহস পায় না। যদি টাকাটা না পাওয়া যায় সেই ভয়ে অনেকে টাকা জমা দেয়না। ওই টাকা তারা আমাদের কাছে বিক্রি করে যায়, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেই। তারা পচা নোট বিবেচনা করে টাকা দেয়।”
সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন খুচরা বাজারের ভোক্তারা। মাছ মাংস কেটে মাপার পর টাকা দিতে গেলে তা ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে হরহামেসাই। প্রতিদিনই এমন বিড়ম্বনায় পড়ছেন অসংখ্য ক্রেতা।
ভোক্তারা জানান, পুরনো টাকা হলেই দোকানদাররা নিতে চাচ্ছেনা। বলছে, এটা চলবেনা, এটা ফেরত নিয়ে অন্যটা দেন। তবে সরকারের নির্দেশনা আছে যে কোনো টাকা সবাই নিতে বাদ্য। কিন্তু এরা তা মানতে চায়না। অনেক সময় ব্যাংকেও খুচরা টাকা নিতে চায়না।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক হাজার কিংবা ৫শ’ টাকার নোট ব্যাংক ফেরত না নিলে গুলিস্তান গিয়ে তা অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হয় তাদের।
সচল টাকা প্রায়ই অচল হয়ে যাচ্ছে ক্রেতা কিংবা বিক্রেতার কাছে। যার প্রভাব পড়েছে নিত্যকার ব্যবসা বাণিজ্যে।
এএইচ