ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, ৯ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০২:৩৭ পিএম, ৬ মে ২০২৪ সোমবার | আপডেট: ০২:৩৮ পিএম, ৬ মে ২০২৪ সোমবার

এক কৃষককে ধরে মাদক মামলায় চালান দেয়ার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে রাজশাহীর গোদাগাড়ী মডেল থানার পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীর ছেলেকে আটকের ঘটনায় প্রত্যাহার করা হয়েছে ৪ পুলিশ সদস্যকে।

রোববার সন্ধ্যায় রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার সাইফুর রহমানের এক আদেশে তাদের প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এরা হলেন গোদাগাড়ী মডেল থানার এসআই সত্যব্রত সরকার, আকরামুজ্জামান, এএসআই আব্দুল করিম মিন্টু, মঞ্জুরুল ইসলাম ও রঞ্জু আহমেদ।

রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান জানান, শৃংঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। প্রাথমিক তদন্তে তার সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর রোববার সন্ধ্যায় তাদের প্রত্যাহার করে রাজশাহী পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।

গোদাগাড়ী মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাত ৭টার দিকে গোদাগাড়ী থানার পাঁচ পুলিশ চর আষাড়িয়াদহ গ্রামে গিয়ে আব্দুস সামাদ নামের এক কৃষককে আটক করে। তার বিরুদ্ধে মাদক মামলার গ্রেপ্তারী পরোয়ানা আছে বলে সামাদকে হাতকড়া পরানো হয়। এরপর তাকে একটি ফাঁকা মাঠে দুই ঘন্টা বসিয়ে রেখে ৪ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিয়ে মাদক মামলায় চালাল দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। 

রাত ১টার দিকে তার পরিবারের সদস্যরা নগদ ২ লাখ টাকা দিয়ে আব্দুস সামাদকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। 

রোববার বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ সুপারের নজরে এবং প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পান। এরপর পাঁচ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের আদেশ জারি করেন পুলিশ সুপার।

এ ব্যাপারে জানতে আব্দুস সামাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে চর আষাড়িয়াদহ গ্রামের তার এক আত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গোদাগাড়ী থানার পুলিশ মাঝে মধ্যেই তাদের এলাকায় গিয়ে এ ধরণের কাজ করে। যাদের আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভাল তাদের টার্গেট করে ধরে নিয়ে যায়। এরপর মাদক মামলায় আটকানোর ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। পুলিশের এই আটক বাণিজ্যে আতঙ্কে থাকে এখানকার মানুষ। 

এর আগে রোববার বিকালে উপজেলার গোগ্রাম বাজারে কাপড় ব্যবসায়ী মোর্ত্তজা আলীর ছেলে সোহানকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জসহ চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।

এরা হলেন, প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই রেজাউল করিম, এএসআই আনোয়ারুল ইসলাম, কনস্টেবল রেজাউল করিম ও মিলন হোসেন। তাদেরকেও প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আব্দুল মতিন বলেন, পৃথক দুটি ঘটনায় একদিনে নয়জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার তারা সবাই থানা থেকে ছাড়পত্র নিয়ে পুলিশ লাইনে রিপোর্ট করেছেন।

এএইচ