ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

পুলিশের বিরুদ্ধে কলেজছাত্রের পরিবারের অভিযোগ দায়ের

রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:৪১ এএম, ১৬ মে ২০২৪ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৯:৪২ এএম, ১৬ মে ২০২৪ বৃহস্পতিবার

গত তিন বছর ধরে কলেজছাত্র ইসমাইল হোসেনের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করার অভিযোগ গোদাগাড়ী থানার এসআই আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ গত রোববার রাতে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে একটি মাদক মামলায় ইসমাইলকে কারাগারে পাঠান তিনি। ওই মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামির সঙ্গে নামের মিল থাকায় সুযোগ নেন এসআই আতিকুর। 

ওই ঘটনায় বুধবার (১৫ মে) দুপুরে গোদাগাড়ী থানার ওসি আব্দুল মতিন ও এসআই আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি ও রাজশাহী পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভূক্তভোগী কলেজছাত্রের ভাই আব্দুল হাকিম রুবেল। 

অভিযোগে তিনি বলেন, ২০২১ সাল থেকে এসআই আতিকুর রহমান তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছেন। সর্বশেষ আমার কলেজ পড়ুয়া ছোটভাই ইসমাইল হোসেনকে ধরে নিয়ে গিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে পরিবারের মানক্ষুন্ন করেন। এর আগে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে আমার পিতা আব্দুল করিমকে ধরে নিয়ে গিয়ে নাশকতার মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠায়। 

এসব ঘটনা তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি।

আব্দুল হাকিম রুবেল জানান, ২০২১ সালে জমি নিয়ে আমার চাচা গোলাম মোস্তফার সঙ্গে দ্বন্দ্ব হলে তিনি আমাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই বছরের ২০ ও ২২ জানুয়ারি তদন্তে যান গোদাগাড়ী থানার এসআই আতিকুর রহমান। তদন্তে গিয়ে তিনি আমার বৃদ্ধ পিতা-মাতার সঙ্গে অশালীন আচরণ ও তাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। 

এসময় তিনি আমাদের উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন। এ ঘটানার প্রতিকার চেয়ে ২৬ জানুয়ারি এসআই আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দেন আমার পিতা। এরপর আমাদের উপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এসআই আতিকুর। এরপর থেকে তিনি বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছেন।

এসব বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে গোদাগাড়ী মডেল থানার এসআই আতিকুর রহমান বলেন, জমি নিয়ে ঝামেলা তদন্তে একবার তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেসময় আমার সঙ্গে তৎকালিন ওসি কামরুল ইসলাম ছিলেন। সেদিন আমি নিজে কিছু বলিনি যা বলার ওসি স্যারই বলেছেন। সেদিন আমার মোবাইল ডিউটি থাকায় সেখানে গিয়েছিলাম। 

রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান বলেন, নামের মিল থাকায় কলেজছাত্র ইসমাইল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর বিষয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা সেটি তদন্ত করে দেখব। অভিযোগ সত্য হলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। 

গত সোমবার নামের মিল থাকায় কলেজছাত্র ইসমাইল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় এসআই আতিকুর রহমান। কলেজছাত্রের পরিবারের আপত্তি না মানলেও পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পুনঃতদন্ত শেষে ‘ভুল করে’ তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। 

এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসমাইল কারাগার থেকে মুক্তিপান। 

ভুক্তভোগী ইসমাইল হোসেন (২১) গোদাগাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র। তিনি গোদাগাড়ী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফাজিলপুর গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে। 

এএইচ