ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৪ জুলাই ২০২৪,   আষাঢ় ২০ ১৪৩১

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে স্কুল ছাত্র হত্যার ঘটনায় চাচীসহ গ্রেফতার ৫

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৬:৩৯ পিএম, ১৬ মে ২০২৪ বৃহস্পতিবার

আড়াই বছর আগে ক্ষেতের আইল কাটা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে আপন চাচী ও চাচীর স্বজনদের হাতে নির্মমভাবে খুন হয় স্থানীয় কেজি স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্র সাকিব। আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের এমনটাই ধারণা পেয়েছে। হত্যা কাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চাচী রাবেয়াসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান সাকিবের স্বজন ও এলাকাবাসী। 

সাকিব  হত্যার দীর্ঘ ২৬ দিন যাবত সাকিবের মা রিফাত বেগম ছেলের বই খাতা শার্টপ্যান্ট আগলে রেখে বিলাপ করে যাচ্ছেন। প্রতিদিন মায়ের বুকফাটা কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে মোদেরগাঁও গ্রামের পরিবেশ। পুত্রশোকে দীর্ঘদিন কান্নাকাটি করে এখন তিনি বাকরুদ্ধ। সাকিবের বাবা কৃষক হারুন মিয়ার ছোট্ট জরাজীর্ণ বসতঘর এখন শোকে কাতর। প্রতিদিন স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সাকিবের মা কে শান্তনা দিতে আসেন। কিন্তু কোন কিছুতে মায়ের আহাজারি থামাতে পারছেন না তারা।

১৭ এপ্রিল বুধবার  সকালে মায়ের হাতে শেষবারের মতো পান্তাভাত খেয়ে বিশ টাকা নিয়ে বাড়ির পাশে মাঠে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মোদেরগাঁও মোকাররম ব্লু বার্ড একাডেমির প্রথম শ্রেণির ছাত্র সাকিবুল হাসান। ১৮ এপ্রিল যাদুকাটা নদীর তীর থেকে মাটিচাপা দেয়া সাকিবের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় ১৯ এপ্রিল সাকিবের বাবা হারুন মিয়া অজ্ঞাত নামাদের আসামি করে তাহিরপুর থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরপর ক্লুলেস ঘটনার রহস্য উদ্বঘাটনে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের সুত্রধরে ১১ মে শনিবার ভোরে সাকিবের আপন চাচী রাবেয়া বেগমসহ রাবেয়ার বড়বোন,দুলাভাই ও দুই ভাগ্নে কে আটক করে পুলিশ। 

আড়াই বছর আগে ক্ষেতের আইল কাটা নিয়ে সাকিবের পরিবারের সঙ্গে বিরোধ হয় চাচী রাবেয়া বেগমের। সেই বিরোধকে উষ্কেদেন রাবেয়ার দুলাভাই, বড়বোন ও দুই ভাগ্নে। এনিয়ে রাবেয়া তার ভাসুর দেবরদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে রাবেয়া ভাসুর দেবরদের নানান ভাবে অত্যাচার নির্যাতন করতো। ধনাঢ্য প্রভাবশালী দুলাভাই,বড়বোন ও ভাগ্নেরা কথাকথায় ঝগড়াঝাটি করতো তাদের সঙ্গে। তাদের অর্থবিত্তের জোরে রাবেয়া বেগম বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। কথায় কথায় মারদাঙ্গা করা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছিলো। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস বলেন,  শিশুটিকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যাকরে লাশগুমের চেষ্টা করে। জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আপন চাচী ও তার স্বজনরা তাকে হত্যা করে।
এমএম//