ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   আশ্বিন ১ ১৪৩১

ফ্রান্সে রোবটের মাধ্যমে হার্টের রিং পরানোর অভিজ্ঞতা উপস্থাপন ডা. প্রদীপের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৫২ পিএম, ১৭ মে ২০২৪ শুক্রবার | আপডেট: ০৯:৫৩ পিএম, ১৭ মে ২০২৪ শুক্রবার

ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত হলো হৃদরোগবিয়য়ক কার্ডিওলজিস্টদের সম্মেলন। এতে দূর নিয়ন্ত্রিত রোবটের মাধ্যমে হার্টের ধমনীতে রিং পরানোর অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করেছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিটউ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার।

বুধবার (১৫ মে) অনুষ্ঠিত এ ইউরো পিসিআর সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে একমাত্র প্রতিনিধি হয়ে এ অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করেন তিনি।

ইউরো পিসিআর হলো বিশ্বের ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্টদের হৃদরোগবিয়য়ক অভিজ্ঞতা উপস্থাপনের একটি বড় কনফারেন্স।

অনুষ্ঠানে ফ্রান্স, আমেরিকার প্রতিনিধিরা তাদের অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে ভারত ও চীনের পর তৃতীয় দেশ যারা এ ধরনের উচ্চ প্রযুক্তি সস্পন্ন দূর নিয়ন্ত্রিত রোবটের মাধ্যমে হার্টের ধমনীতে রিং পরানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।

অনুষ্ঠানে বিদেশি ফ্যাকাল্টি ও প্যানেলিস্টরা, বাংলাদেশে সাফল্যজনক এ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রশংসা করেন। এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের অভিজ্ঞতা উপস্থাপনের মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয় এবং বিদেশিরা বাংলাদেশ সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণ করেন।

গত পাঁচ ফেব্রুয়ারি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিটউ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর হার্টের মূল রক্তনালির একটিতে ৯০ ভাগ এবং আরেকটিতে ৮০ ভাগ ব্লকে ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার দূরনিয়ন্ত্রিত রোবটিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিনামূল্যে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর ধমনীতে ২টি রিং স্থাপন করেন। এর মাধমে চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করে বাংলাদেশ।

গবেষকরা বলছেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের এ অত্যাধুনিক দূরনিয়ন্ত্রিত বা অপারেশন থিয়েটার- ক্যাথল্যাবের দূর থেকে রোবটিক মাধ্যমে হার্টে রিং পরানোর মাধ্যমে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এশিয়া মহাদেশে ৩য় দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করল।

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতসহ বিশ্বে ১৬০টি দেশে রোবোটিক এনজিওপ্লাস্টি (রোবট দিয়ে হার্টের রিং পরানো) সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে ভারতে ৬টি সেন্টার রয়েছে।

রোবটিক এনজিওপ্লাস্টি বা রোবট দিয়ে হার্টের রিং পরানোর তিন ধরনের সুবিধা আছে। এর একটি হলো রোগীর জন্য সুবিধা আরেকটি হলো কার্ডিওলজিস্ট যিনি রিং পরান, তার জন্য সুবিধা এবং তৃতীয় হলো দেশের জন্য সুবিধা।

ডাক্তার প্রদীপ কুমার কর্মকার এর আগেও দেশে প্রথমবারের মতো কোনো সরকারি হাসপাতালে ট্রান্স ক্যাথেটার এউটিক ভাল্ব রিপ্লেসমেন্ট বা টিএভিআর পদ্ধতিতে বুক না কেটে হার্টের ভাল্ব প্রতিস্থাপন করেন। ২০২০ সালে তার নেতৃত্বে প্রথম জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে সফলভাবে এ অপারেশন সম্পন্ন হয়।

এ পর্যন্ত ডাক্তার প্রদীপ কুমার কর্মকার বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগীর টিএভিআর পদ্ধতিতে এউটিক ভাল্ব প্রতিস্থাপন করেছেন। সম্প্রতি সরকারি হাসপাতালে প্রথমবারের মতো হার্ট অ্যাটাক ঘটিয়ে এইচ ও সি এম বা হাইপারট্রপিক অবস্ট্রাক্টিভ কার্ডিওমায়োপ্যাথি চিকিৎসা করেন তিনি।

বাংলাদেশের এখনও সরকারি ও বেসরকারি কোন হাসপাতালে রোবোটিক এনজিওপ্লাস্টি শুরু হয়নি। ডাক্তার প্রদীপ কুমার কর্মকার দেশের প্রথম চিকিৎসক যিনি এই রোবটিক এনজিওপ্লাস্টির উপর ট্রেনিং নিয়েছেন। যদি সরকার এই রোবটিক সিস্টেমটি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে সরবরাহ করে তবে ডাক্তার প্রদীপ কুমার কর্মকার ও তার দক্ষ টিম পরিপূর্ণভাবে সর্বসময় জন্য সর্বাধুনিক এই চিকিৎসা পদ্ধতি বাংলাদেশের জনগণকে স্বাস্থ্য সেবা দিতে সক্ষম।

এএইচ