ইবিতে গুণীজন সংবর্ধনা
ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪:১৪ পিএম, ১৮ মে ২০২৪ শনিবার
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) কর্মকর্তা সমিতির আয়োজনে গুণীজন সংবর্ধনা-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সম্পাদক এ্যাডভোকেট শাহ্ মনজুরুল হক ও কোষাধ্যক্ষ এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনছারীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
শনিবার (১৮ মে) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ওয়ালিদ হাসান মুকুটের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি দেওয়ান টিপু সুলতান।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল এ.এম আমিন উদ্দিন, প্রধান আলোচক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, গেস্ট অফ অনার ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক এমপি অধ্যক্ষ ড. মোঃ শাহজাহান আলম সাজু।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, এ্যাড. কে. এম মাসুদ রুমী ও এ্যাড. বি. এম আব্দুর রাফেল।
সংবর্ধিত অতিথি শাহ্ মনজুরুল হক বলেন, আমি যখন সুপ্রিম কোর্টের ইলেকশন করেছি তখন বিশ্বববিদ্যালয় শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ অনেকে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে। আমাদের যখনই ডাকা হয় আমরা অত্যন্ত আগ্রহভরে উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করি, কারণ জন্মস্থানের পরে যে জিনিসটা মানুষের সাথে সবচেয়ে বেশি সংশ্লিষ্ট সেটা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে মনে-প্রাণে ধারণ করি। বিশ্ববিদ্যালয়কে ধারণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের কারণেই মানুষ অনেক বড় পরিচিতি লাভ করে। আমরা যারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি বহন করি প্রত্যেকের উচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম, সার্বিক পরিস্থিতি সবার সামনে ভালোভাবে উপস্থাপন করা।
শাহজাহান আলম সাজু বলেন, আমরা গর্ব করে বলতে পারি বাংলাদেশের আইন জগতে একজন মঞ্জু আছে, বর্তমান সরকারের দুইজন পূর্ণসচিব আছে যারা ইবির সাবেক কৃতী ছাত্র যাদের হাত দিয়ে বাংলাদেশের ডেভেলপমেন্ট পাশ হয়। আমাকে রেজিস্টার বিল্ডিং থেকে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টার দিন এই কর্মকর্তারা যদি বেরিকেড দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাকে উদ্ধার না করতেন তাহলে হয়তো আমার লাশও খুঁজে পাওয়া যেত না। কর্মকর্তা সমিতির কাছে আমাদের সারাজীবন মাথানত হয়ে থাকবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী, অমুসলিম ভর্তি করতে গিয়ে, বাংলা ইংরেজিসহ সাইন্সের আধুনিক ডিপার্টমেন্ট খুলতে যেয়ে, অন্য দুটি সংগঠনের সাথে আমাদের সংঘর্ষ হয়েছিল, তাদের একজনের মামলায় আমাদের ৬ মাসের সাজাও হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, যে বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা মুক্তবুদ্ধি চর্চার প্রতিক হিসেবে দেখতে চেয়েছিলাম তার শতভাগ না হলেও অনেকটা কাছাকাছি আমরা গিয়েছি। যখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ভাল খবর পাই তখন আমাদের অত্যন্ত আনন্দ লাগে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অর্জন করা অনেক কঠিন, ধ্বংস করা অনেক সহজ। ক্ষমতা আছে বলে এমন কোন কাজ করবেন না যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়, সুনাম নষ্ট হয়৷
প্রধান অতিথি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিচারকসহ আরও অনেক অ্যাডভোকেট সুপ্রিম কোর্টে ভালো পারফর্মেন্স করতেছেন। আমি বারের সদস্য হিসেবে দেখি আপনাদের ছেলেরা বিভিন্ন জায়গায় ভালো অবস্থানে আছেন। যার অবদান মূলত শিক্ষকদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ অনেকসময় বিভ্রান্ত করে আমাদের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলব 'বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়' নামকরণ করতে। এতে সকল কনফিউশান দূর হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমরা সকলে জানি পৃথিবীতে মানুষ হেরে দুঃখ পায়, জিতে আনন্দ পায়। কিন্তু একটি জায়গা আছে যেখানে হেরে আনন্দ পাওয়া যায়। সেটা হলো ছাত্রের কাছে এবং পুত্রের কাছে। ছাত্র আর পুত্রের কাছে আমরা শিক্ষকরা হেরে আজকে প্রচণ্ড আনন্দবোধ করছি।
তিনি আরও বলেন, আজকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আমরা যে ছাত্রদের নিয়ে এধরনের সভার আয়োজন করলাম তারাই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডী পেরিয়ে, তারা আজকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ধ্রুবতারার মতো প্রজ্জ্বলিত। যাদেরকে সংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে তারা আরও এগিয়ে যান আমাদের এই প্রত্যাশা। এতোকিছুর ভেতরেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটদের আগমন এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে আলোকিত করে তুলেছে। আমরা সত্যি আজকে আলোকিত। এই মঞ্চে যারা আছেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সামনে যারা বসে আছেন, যারা সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন একদিন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে তারা আরও আরও বেশি আলোকিত করবেন।
এএইচ