ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৭ ১৪৩১

দেশে ৩০ শতাংশ প্রসব ঘটে অদক্ষ দাইয়ের হাতে

মিনালা দিবা

প্রকাশিত : ১১:৫৫ এএম, ২১ মে ২০২৪ মঙ্গলবার | আপডেট: ১২:২৪ পিএম, ২১ মে ২০২৪ মঙ্গলবার

চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে দেশের মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এই চিত্র যেমন আছে, তেমনি এই বাস্তবতাও রয়েছে প্রতিদিন শুধু সন্তান জন্মদিতে গিয়ে কমপক্ষে ১১ মায়ের প্রাণ ঝরে যায়। প্রশ্ন হলো, কেন এমনটা হচ্ছে? চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে এর উত্তর খোঁজার চেষ্টা।

দশ মাস দশদিন গর্ভে ধারণ। মাতৃত্বের এই যুদ্ধ জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ের মতন।  

এদেশের আর্থ-সামজিক বাস্তবতায় সব মায়েরা সফল হয় না। অভিজ্ঞতা থাকে না, ন্যুনতম প্রস্তুতিও থাকে না, বরং থাকে কু-সংস্কারের পরিবেশ। এরইমাঝে একজন মায়ের পথ চলা। স্বাস্থ্য পরীক্ষা কিংবা পরিচর্যা, বহু দূরের বিষয়। 

এই যাত্রায় অনেকে কষ্টে উৎরে যায় ঠিকই কিন্তু কারো কারো ভাগ্য প্রসন্ন হয় না। অকাল গর্ভপাত মিস-ক্যারেজ হয়। দুর্ঘটনা বলা হলেও পরিবারের সদস্যরা অবহেলার দায় এড়াতে পারেন না। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দিনে গড়ে ১১ জন মা প্রাণ হারান। দেশে গেল বছর সর্বশেষ ‘স্যাম্পল ভাইটাল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম জরিপ’ পরিচালিত হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, ৬৫ ভাগ শিশু হাসপাতালে ভূমিষ্ট হয়, বাকি ৩৫ ভাগ বাড়িতে। 

কিশোর কিশারী প্রজজন স্বাস্থ্য প্রোগ্রাম ম্যানেজার মনজুর হোসেন বলেন, “বাংলাদেশে যে মায়েরা মারা যায় তার মধ্যে অন্যতম কারণগুলোর মধ্যে প্রথমটি হলো প্রসবপরবর্তী রক্তক্ষরণ, তাতে ২৪ শতাংশ মা মারা যায়। এগুলো প্রতিরোধের জন্য আমরা মানুষকে পরামর্শ দিচ্ছি, সেবা দিচ্ছি।”

এখনও দেশে ৩০ শতাংশ প্রসবের ঘটনা ঘটে অদক্ষ দাইয়ের মাধ্যমে। আবার, প্রতিবছর প্রসবজনিত রক্তক্ষরণে ৩১ শতাংশ গর্ভবতী মায়ের মৃত্যু ঘটে। আরও ভয়ংকর তথ্য, গর্ভকালীন সময়ে কমপক্ষে ৪ বার চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার কথা থাকলেও অনেকে তা নেন না। 

স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ মনজুন নাহার বলেন, “বছরে প্রায় ৫৩ লাখ মা গর্ভবতী হচ্ছেন বাংলাদেশে। এর মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ আন-সেভ অ্যাবশনের দিকে যায়।”

পরিমিত খাবার, বিশ্রাম ও চলাচলের সাধারণ বিধিনিষেধ মেনে চলার কথা বলা হলেও ক’জন-ই বা তা মানতে পারেন।  

মেরী স্টোপস বাংলাদেশ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সুমনা ফেরদৌস বলেন, “তার শারীরিক পুষ্টি দরকার আছে, তার মানসিক পুষ্টি দরকার আছে, শারীরিক ব্যায়ামের দরকার আছে।”

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে মাতৃ মৃত্যুর হার কমাতে এখন জনসচেতনতার কোন বিকল্পও দেখছেন না স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা। 

এএইচ