ছেলের চুরির অপবাদে নির্যাতনে মায়ের মৃত্যু, থানায় অবস্থান
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩:০৩ পিএম, ২৩ মে ২০২৪ বৃহস্পতিবার
ঠাকুরগাঁওয়ে ছেলের চুরির অপবাদে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের পর দায়ন ঋষি (৩৭) নামে এক আদিবাসী গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার রহস্যজনক মৃত্যুর বিচারের দাবিতে প্রতিবেশী ও পরিবার লোকজন থানায় অবস্থান নিয়েছে। তাদের অভিযোগ, মেরে ফেলে গলায় ফাঁস দিয়ে গাছের সাথে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ মে) সকালে সদর উপজেলার পৌর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ড পরিষদ পাড়া এলাকার এক লিচু বাগান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দায়ন ঋষি পরিষদ পাড়ার বিষু ঋষি স্ত্রী।
দুপুরে সদর থানায় অবস্থান করার সময় মৃত ওই নারীর প্রতিবেশী ও স্বজনরা বলেন, দায়ন ঋষির ছেলে শিশু রাজেন ও প্রতিবেশী সঞ্জিত মিলে নাকি একই এলাকার আমজাদ নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ৩ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করেছে। এমন অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে রাজেনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান আমজাদসহ তার সহযোগীরা।
পরে রাতে তার মাকেসহ নাকি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার সকালে বাড়ির পাশে একটি লিচু গাছে দায়ন ঋষিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে।
তারা অভিযোগ করে বলেন, যারা তাদের তুলে নিয়ে গিয়েছিল তারাই ওই গৃহবধূকে হত্যা করার পর হয়তো গলায় ফাঁস দিয়ে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছে। তাই হত্যাকারীদের কঠোর বিচারের দাবিতে থানায় এসেছি। যারা এমন কান্ড ঘটিয়েছে আমরা তাদের ফাঁসি চাই।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর দোলন কুমার মজুমদার বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে আমজাদসহ ৪-৫ জন ব্যক্তি আমার কাছে আসেন। বিষুর ছেলে নাকি আমজাদের বাড়িতে ঢুকে টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করার সন্দেহে তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। মারপিটের একপর্যায়ে ওই ছেলে চুরি করার কথা স্বীকার করে ও চুরির টাকা তার মা দায়ন ঋষির আছে বলে জানান রাজেন। তাই দায়ন ঋষিকেও তুলে নিয়ে যায় ও মারপিট করে তারা। আমি চুরির মাল পাওয়া গেলে মারপিট না করে তাদের থানায় দিতে বলি। কিন্তু তারা সেটা না করে আরও মারপিট করে।
পরে সন্ধ্যায় টাকা উদ্ধার করার জন্য স্থানীয় ছেলেপেলেদের হতে তাদের তুলে দেন। এরপর আর ওই মহিলার খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে আজকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান দোলন কুমার।
নিহতের স্বামী বিষু ঋষি অভিযোগ করে বলেন, যারা আমার ছেলে ও স্ত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল তারাই তাকে মারে ঝুলিয়ে দিয়েছে। আমি তাদের বিচার চাই।
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিথুন সরকার বলেন, এ বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে ও ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে জানা যাবে মৃত্যুর কারণ। নিহতের পরিবার অভিযোগ দিলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এএইচ