ঢাকা, বুধবার   ২৬ জুন ২০২৪,   আষাঢ় ১২ ১৪৩১

ডেসটিনি এমডি রফিকুলের জামিন শুনানি ৬ মাস মুলতবি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:২২ পিএম, ২৭ মে ২০২৪ সোমবার

বিনিয়োগকারীদের টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের এমডি রফিকুল আমীনের জামিন আবেদনের শুনানি ছয় মাসের জন্য মুলতবি করেছে আপিল বিভাগ।

আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বেঞ্চের অন্য বিচারপতিগণ হলেন বিচারপতি মোঃ আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলাম।

আদালতে রফিকুল আমীনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট শাহ মঞ্জরুল হক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট খুরশীদ আলম খান।

এডভোকেট খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে অর্থ পাচারের মামলায় রফিকুল আমীনের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন রফিকুল আমীন। বিষয়টির শুনানি আজ ছয় মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) করে আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

ছয় মাস পর আবার জামিন আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে বলে জানান এ আইনজীবী।

খুরশীদ আলম খান বলেন, এই মামলায় এরই মধ্যে ১০৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। আশা করছি, ছয় মাসের মধ্যে বিচার শেষ হবে। আমরা একথা আদালতে জানিয়েছি। এ কারণে জামিন শুনানি ছয় মাসের জন্য স্ট্যান্ড ওভার রেখে আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুল আমীনসহ ডেসটিনির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয় রাজধানীর কলাবাগান থানায়। দুই মামলায় মোট ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।

দুই বছর তদন্তের পর ২০১৪ সালের ৪ মে একটি (ট্রি প্ল্যান্টেশন) মামলায় রফিকুল আমীনসহ ১৯ জন এবং অপর মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রফিকুল আমীনসহ ১২ জনের নাম দুটি মামলাতেই রয়েছে। দুই মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ৫৩। 

আসামিদের মধ্যে কারাগারে আছেন ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, এমডি রফিকুল আমীন ও পরিচালক কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম। জামিনে আছেন তিনজন, বাকিরা পলাতক।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৮ সাল থেকে ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী। 

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ওই টাকার মধ্যে এলসি (ঋণপত্র) হিসেবে ৫৬ কোটি ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৪০ টাকা এবং সরাসরি পাচার করেছে আরও ২ লাখ ৬ হাজার মার্কিন ডলার।

অন্যদিকে মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে। ওই অর্থ আত্মসাতের ফলে সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়েন।

মামলা দায়েরের চার বছরের মাথায় ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট রফিকুল আমীনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়। এখন বিচারিক আদালতে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।

এএইচ