ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বৈশ্বিক বিবেচনায় চা বহুমুখীকরণের পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৫২ পিএম, ৪ জুন ২০২৪ মঙ্গলবার

শ্রমিকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে যত্নবান হলে বাড়বে উৎপাদন, বাড়বে আয় চা বাগান মালিকদের প্রতি এমন পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈশ্বিক চাহিদা বিবেচনায় চা বহুমুখীকরণেরও পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। 

মঙ্গলবার (৪ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ৪র্থ 'জাতীয় চা দিবস' উদযাপন ও 'জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৪' প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চা খাতে সরকার গুরুত্ব বাড়িয়েছে। চা অর্থকারী ফসল এবং এটি দেশের আর্থিক স্বচ্ছলতা এনে দিতে সাহায্য করছে। দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ায়, দিনে দিনে চায়ের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। তাই চা শিল্পের জন্য আরও গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চল চায়ের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে সেটাকে সম্প্রসারণ করা, যত্ন করা, কীভাবে আরো চা উৎপাদন বাড়ান যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এ ছাড়া চা বোর্ড, ক্ষুদ্র চাষিদের প্রযুক্তি সহায়তা, প্রণোদনা, সবদিক থেকে সরকার সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। পঞ্চগড়ের পাশাপাশি লালমনিরহাটেও চা বোর্ডের স্থায়ী অফিস নির্মাণ করা হয়েছে।  

সরকারপ্রধান বলেন, সাধারণ মানুষের কাছে চা অনেক প্রিয়। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ গেছে, সন্ধ্যার পরে সব চা দোকানে ভিড় করে বসে থাকে। আমাদের নিজেদের চায়ের চাহিদা বেড়ে গেছে। আমরা যা উৎপাদন করি তা রপ্তানির জন্য খুব বেশি একটা থাকে না। বাংলাদেশের মানুষ খুব বেশি চা খেতে পছন্দ করে।

উৎপাদন বৃদ্ধি ও রপ্তানিসহ এই শিল্পের প্রসারে চা বোর্ডের প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, চা শ্রমিকদের সঙ্গে আমাদের আত্মার সম্পর্ক। আমার হাতের বালাও চা শ্রমিকদের দেয়া উপহার।

চা শিল্পকে বেগবান করতে শ্রমিকদের প্রতি যত্নবান হতে মালিকদের আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অভিভাবকদের মতো করে শ্রমিকদের দেখবেন, যাতে তাদের জীবনমান উন্নতি হয়। চা শ্রমিকরা যাতে আবাসন থেকে শুরু করে সব ধরনের সুযোগ পায়, তার ব্যবস্থা আপনারা করবেন। তাদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে। তাদের সন্তানরা যেন ভালোভাবে লেখাপড়া করতে পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। 

বিশ্বে চায়ের চাহিদা বিবেচনায় সুগন্ধি চা উৎপাদনের তাগিদ দেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, অ্যারোমা টি, হারবাল টি বিভিন্ন ধরনের চা উৎপাদন করতে হবে আমাদের আবার মানও বাড়াতে হবে। আর তাই এটি নিয়ে গবেষণার কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। আর বিশেষ নজর দিতে হবে বলেও জানান তিনি।

সিলেটের মালনিছড়ায় ১৮৫৪ সালে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয় চা চাষ। সম্ভাবনাময় এই শিল্প বিকশিত হয়েছে দেশের ১৬৮টি বৃহৎ ও ৮ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র চা বাগানের মাধ্যমে। যেসব বাগান থেকে গেলো বছর উৎপাদন হয়েছে ১০২.৯২ মিলিয়ন কেজি চা। প্রধান অর্থকরী ফসল ও রপ্তানি পণ্য হিসেবে চায়ের ঐতিহ্য প্রসারে ৪ জুন জাতীয় চা দিবস ঘোষণা করা হয়।

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে চতুর্থ জাতীয় চা দিবসের অনুষ্ঠানে এই শিল্পে অবদান রাখা ৮ ক্যাটেগরিতে বাগান ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৪ সম্মাননা প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।

এএইচ