রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের সাত বছর, মৃত্যুকূপে এখনও বসবাস
রাঙামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১:৩৮ এএম, ১৩ জুন ২০২৪ বৃহস্পতিবার
রাঙামাটির ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনার সাত বছর পূর্ণ হলো আজ বৃহস্পতিবার। ২০১৭ সালের ১৩ জুন মাটি চাপা পড়ে ৫ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের প্রাণহানী ঘটে। তবে ভয়াবহ এ ঘটনার সাত পেরিয়ে গেলেও সেই ক্ষতচিহ্নে নতুন নতুন বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে মৃত্যুকূপে বসবাস করছেন হাজারো মানুষ।
২০১৭ সালের ১৩ জুন প্রবল বৃষ্টিপাতে ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনায় রাঙামাটির শহরের ভেদভেদীর যুব উন্নয়ন বোর্ড এলাকা, মুসলিম পাড়া, শিমুলতলী, রূপনগর, সাপছড়ি, মগবান, বালুখালী এলাকায় এবং জুরাছড়ি, কাপ্তাই, কাউখালী ও বিলাইছড়ি এলাকায় ৫ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের মৃত্যু হয়।
শহরের মানিকছড়িতে রাঙামাটি -চট্টগ্রাম সড়কের উপর থেকে মাটির সড়াতে গিয়ে ৫ সেনা সদস্য পাহাড় ধসে মাটি চাপায় পড়ে মারা যান। ভয়াবহ সেই পাহাড় ধসে এতো মৃত্যুর মিছিল ও বিপুল পরিমাণের ক্ষয়ক্ষতির পরও ঝুঁকিতে থাকা লোকজনদের পুর্নবাসন আজও করা হয়নি। বরং পাহাড়ের পাদদেশে ভাজে ভাজে নিত্য নতুন ঘর বাড়ি নির্মাণ করে মৃত্যুকূপে বসবাস করছেন।
জেলা প্রশাসন থেকে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারী লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে মাইকিং ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ না করতে নিষেধ করা হয়ে থাকে। কিন্তু ঝুঁকিতে থাকা এসব লোকজন এ নিষেধাজ্ঞা মানছেন না কেউ।
রাঙামাটি পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে শিমুলতলী, রুপনগর, লোকমন্দির পাড়া, পোষ্ট অফিস কলোনী এলাকা, নতুন পাড়া, বিদ্যানগর, কিনারাম পাড়া, সিলেটি পাড়াসহ অন্তত পক্ষে ২৯টি স্থানকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। এছাড়া নানিয়ারচর, কাউখালী উপজেলাসহ কয়েকটি উপজেলায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস রয়েছে। এসব এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন ১৫ হাজারের অধিক পরিবার।
মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, জেলা প্রশাসক, রাঙামাটি (যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় ও সচেতনার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করা হচ্ছে। তবে জনসচেতনা প্রয়োজন। কারণ পাহাড়ের পাদদেশে সব সময় ঝুঁকি থাকে তাই তাদের নিরাপদ স্থানে বসবাস করা প্রয়োজন।
পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বাড়িঘর নির্মাণে প্রশাসনের কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি ও ঝুঁকিতে থাকা লোকজনদের সচেতনা সৃষ্টি করা গেলে পাহাড়ধসে প্রাণহানী রোধ করা সম্ভব বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
এএইচ