ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের চিঠি স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি প্রচ্ছন্ন হুমকি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৩৭ পিএম, ২৩ জুন ২০২৪ রবিবার | আপডেট: ০৩:৩৮ পিএম, ২৩ জুন ২০২৪ রবিবার

সম্প্রতি দেশের সাবেক ও বর্তমান উচ্চ এবং নিম্নপদস্থ পুলিশ সদস্যদের অস্বাভাবিক সম্পদের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেশকিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত ও  প্রচারিত হয়েছে। এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে দেশের সকল গণমাধ্যমের সম্পাদক বরাবর চিঠি দিয়েছে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। যা দেশের সম্প্রচার সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার, বিজেসি’র দৃষ্টিগোচর হয়েছে। 

সকল শ্রেণী-পেশা ও সার্বিক জনস্বার্থে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ যখন ক্রমাগত উন্নত করা জরুরি, তখন কোনো একটি পেশার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে ঢালাওভাবে টার্গেট করে এমন বিবৃতি- সমাজে হুমকির সংস্কৃতি তৈরি করবে বলে মনে করে বিজেসি। 

রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ও সমাজের দর্পণ গণমাধ্যমকে যদি এভাবে দেখা কিংবা টার্গেট করা হয় তাহলে দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারের শূন্য সহিষ্ণু নীতি'র মিশনকে দুর্বল করা হয়। কারণ গণমাধ্যমের কাজ অনিয়ম-দুর্নীতি-বিচ্যুতিকে তুলে ধরা, সকল ক্ষেত্রে ক্ষমতা কিংবা ক্ষমতাবানদের প্রশ্ন করা, জনপরিসরে, জনস্বার্থে জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলা।

বিভিন্ন সময়ে পুলিশ বাহিনীর কর্তা ব্যাক্তিরা বলেছেন, “ব্যাক্তির দায় কোনদিন প্রতিষ্ঠান নেবে না”। কিন্তু পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এই চিঠির মাধ্যমে কি ব্যাক্তির দুর্নীতির দায় প্রতিষ্ঠানের ঘাড়ে তুলে নেয়া হয় না? যেসব প্রতিবেদন গণমাধ্যমে হয়েছে তা সত্য না মিথ্যা সে বিষয়ে কোনো ধরনের তদন্ত না করে ঢালাওভাবে এধরনের চিঠি দেয়া পেশাদারী দায়িত্বশীলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। 
 
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে পুলিশের মুক্তিযুদ্ধকালীন আত্মত্যাগ ও দেশের জন্য জীবন বিলিয়ে দেয়াসহ নানা কর্মকান্ডের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। পুলিশের ভালো কাজের মুল্যায়ন সব সময় প্রতিবেদন আকারে সাংবাদিকরা প্রচার করে থাকেন। করোনাকালে পুলিশের মানবিক কর্মসূচি গণমাধ্যমের কারনেই দেশবাসী জানতে পারে। ভালো খবরের পাশাপাশি দুর্নীতি-অনিয়মের অনুসন্ধান এবং ক্ষমতার অপব্যবহার উম্মোচন করাও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার কাজ।

বিজেসি মনে করে, যেসব সাবেক ও বর্তমান পুলিশ সদস্যর বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন হয়েছে- তা যদি অসত্য হয়, দালিলিক প্রমাণ যদি না থাকে, তাহলে দেশের আইন অনুযায়ি ঐ ব্যাক্তি প্রেস কাউন্সিলে যেতে পারেন। যেখানে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন ও গণমাধ্যমের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আইনসম্মত পন্থা আছে। তা না করে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ঢালাওভাবে সব প্রতিবেদনকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলা স্বাধীন সাংবাদিকতা ওপর হস্তক্ষেপের শামিল।  

পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এ চিঠির বিষয়ে উদ্বেগ ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বিজেসি। প্রতিবেদন বন্ধ নয় বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের ঘোষিত “শূন্য সহিষ্ণু নীতি” বাস্তবায়নের জন্য বাহিনীর সহযোগিতা আশা করে বিজেসি।

এমএম//