ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

প্রস্তাবিত বাজেট ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথ সুগম করেছে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৫ পিএম, ২৪ জুন ২০২৪ সোমবার | আপডেট: ১০:৩৭ পিএম, ২৪ জুন ২০২৪ সোমবার

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথ সুগম করেছে। কারণ বর্তমান বাজেটে জনগণের কল্যাণকে অধিকতর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদে আজ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সম্পর্কে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সরকারি দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনগণের নিরাপত্তার ওপর তাৎপর্যপূর্ণ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, যা দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট দেশে পরিণত করতে সাহায্য করবে।’

চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং হামাস-ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত এর কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও ৬ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭,৯৭,০০০ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেন। এটি বর্তমান সরকারের ১৬তম এবং দেশের ৫৩তম বাজেট।
আলোচনায় অংশ নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মুহিববুর রহমান বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটটি স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে। কারণ এই বাজেটে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত বাজেটে মাথাপিছু আয় ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে, চরম দারিদ্র্য দূর হবে, মূল্যস্ফীতি ৪ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে পৌঁছাবে, বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের নিচে এবং বিনিয়োগ জিডিপি’র ৪০ শতাংশে উন্নীত হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটের তীব্র সমালোচনা করে ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেন, বাজেটে বিভিন্ন পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানো হলেও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেশনের কারণে পণ্যের বাজারে এর কোনো প্রতিফলন নেই।

দুর্নীতি প্রতিরোধে বিশেষ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের অর্থ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও বিচার করে কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ঋণখেলাপী ও অর্থ আত্মসাৎকারীদের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হোক। দুর্নীতি বন্ধ করতে না পারলে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির সলিল সমাধি হবে।’
পূর্ণাঙ্গ রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘টিসিবির ডিলারশিপ বাড়ানো ও এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডে গরিব মানুষের একাংশকে কিছুটা স্বস্তি দিলেও নি¤œবিত্ত ও মধ্যবিত্ত বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য তা বিশেষ কোনো ফল বহন করবে না। এ ক্ষেত্রে গণবণ্টন ও পূর্ণাঙ্গ রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।’
প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে সরকারি দলের সদস্য শ. ম রেজাউল করিম বলেন, সারা বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তাবিত বাজেট সময়োপযোগী।
সরকারি দলের সদস্য আ ফ ম রুহুল হক বলেন, ‘টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা’ শীর্ষক প্রস্তাবিত দেশের ৫৩তম বাজেট যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় মাত্র ৪.৬ শতাংশ বড়, চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং হামাস-ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত অর্থনীতির জন্য একটি উদীয়মান চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই সময়ে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বাজেট সহায়তা করবে।

স্বতন্ত্র সদস্য মো. আবদুস সালাম বলেন, কোন উৎপাদনশীল শিল্পখাতে বিনিয়োগের শর্তে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দিলে তা কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির জন্য ব্যাপক সহায়ক হবে।সরকারের সার্বজনিন পেনশন স্কিমের উদ্যোগের প্রশংসা করে কল্যাণ পার্টির সদস্য সৈয়দ মুহাম্মদ  ইব্রাহিম বলেন, সার্বজনিন পেনশন স্কিম সরকারের একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ।

তিনি বর্তমান বাজারমূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সেনাবাহিনীসহ অন্যান্যদের অবসরকালীন পেনশন হার নির্ধারণ করার দাবি জানান।      
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, সরকারি দলের সদস্য মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, সাগুফতা ইয়াসমিন, খাদিজাতুল আনোয়ার, আব্দুস সবুর, নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, মো. সালাহ উদ্দিন মিয়াজী, নুরুল ইসলাম সুজন, মোছা: নাছিমা জামান ববি, শাম্মি আহমেদ, সাবেরা বেগম, বেদৌরা আহমেদ সালাম, ঝর্ণা হাসান, পারুল আক্তার, জাতীয় পার্টির সদস্য এ. বি. এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও স্বতন্ত্র সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, সৈয়দ সায়েদুল হক আলোচনায় অংশ নেন।

এর আগে তারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা সর্বাত্মক ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

কেআই//