ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

মার্তিনেজের জোড়া গোল, কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:১৩ এএম, ৩০ জুন ২০২৪ রবিবার

আগের ম্যাচের একাদশ থেকে ৯ জনকে পরিবর্তন করে পেরুর বিপক্ষে খেলতে নামে আর্জেন্টিনা। দলে ছিলেন না মেসিসহ অন্য বড় তারকারাও। তবে তাদের অভাব বুঝতে দেননি লাউতারো মার্তিনেজ। নিজের জোড়া গোলে পেরুকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে দলকে কোয়ার্টার ফাইনালে নিলেন মার্তিনেজ।

মূল খেলোয়াড় ছাড়াও যে আর্জেন্টিনা শক্তিশালী তা আবারও প্রমাণ করলো তারা। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পরে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দলকে এগিয়ে দিলেন লাউতারো মার্তিনেজ। এরপর তার শেষ মুহূর্তের গোলে ২-০ ব্যবধানে জয় পায় আর্জেন্টিনা। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে লিওনেল মেসির দল।

নিষেধাজ্ঞার কবলে ছিলেন দলের কোচ স্কালোনি। ইনজুরির কারণে দলে ছিলেন না মেসি, মার্কাস আকুনিয়ারা। ম্যাক অ্যালিস্টার, রদ্রিগো দি পলদের বিশ্রামে রেখেছিলেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। তবে ম্যাচে জয়ে পেতে বেগ পেতে হয়নি আর্জেন্টিনাকে।

টানা তিন ম্যাচে গোল করে এদিন আরেক রেকর্ডেও নাম বসালেন লাউতারো মার্তিনেজ। ২০০১ সালের পর থেকে কোপা আমেরিকায় গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচেই গোল করার রেকর্ড ছিল না কোনো খেলোয়াড়ের। ২৩ বছর পর সেই কীর্তি গড়লেন আর্জেন্টাইন এই স্ট্রাইকার। ৪ গোল করে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনি। 

এদিন আর্জেন্টিনার গোলের ব্যবধান আরেকটু বাড়তে পারতো। ৭২ মিনিটে পেনাল্টি মিস করে বসেন বার্থডে বয় লিয়ান্দ্রো পারেদেস।

মেসির মাঠে না থাকা অবশ্য আর্জেন্টিনাকে সমস্যায় ফেলতে পারেনি। বরং মেসিহীন আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে পেরু শুরু থেকেই চাপে ছিল। পেরুর গোলরক্ষক গ্যালিসকে প্রথমার্ধের নায়ক বলা যেতেই পারে। অন্তত চারবার দলের নিশ্চিত পতন আটকেছেন তিনি।

শুরু থেকেই আগ্রাসী ফুটবল শুরু করেন ডি মারিয়ারা। একের পর এক আক্রমণে পেরুর রক্ষণকে ব্যস্ত রেখেছিলেন আর্জেন্টিনার ফুটবলারেরা। ১২ মিনিটে প্রথম গোলের সুযোগ পায় বিশ্বচ্যাম্পিয়নেরা। দি মারিয়ার কর্নার থেকে গোল করার সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন ওতামেন্দি। তার শট অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়।

বেশির ভাগ সময়ই খেলা হয়েছে পেরুর অর্ধে। পেরুর প্রায় সব ফুটবলারই রক্ষণ সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন। তার মধ্যেই ২১ মিনিটে প্রতি আক্রমণে সুযোগ তৈরি করেছিল পেরু। তবে গোল হয়নি।

২২ মিনিটে লাউতারো মার্তিনেজ পেরুর বক্সে বল পান দি মারিয়ার কাছ থেকে। তার শট আটকে দেন গ্যালিস। যদিও তিনি অফসাইডে ছিলেন।  ২৬ মিনিটে আর্জেন্টিনাকে আরও এক বার হতাশ করেন গ্যালিস। পারদেসের শট আটকে দেন তিনি। ৪৪ মিনিটে আর্জেন্টিনার আরও একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন পেরুর গোলরক্ষক। ডি মারিয়ার কাছ থেকে পেরুর বক্সের ডান দিকে বল পান মন্টিয়েল। তিনি পাস দেন লো সেলসোকে। তার শট আটকে দেন গ্যালিস। ফিরতি বলে গারনাচোর শট বারের উপর দিয়ে চয়ে যায়।

গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ৪৭ মিনিটে ডি মারিয়ার বাড়ানো থ্রু বল ভেঙে দেয় পেরুর ডিফেন্স লাইনআপ। এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে আলতো চিপে পরাস্ত করেন মার্তিনেজ।  

ম্যাচের ৭২ মিনিটে ডি মারিয়ার পাস ধরেই আরেকটি গোলের সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। গোলমুখে আর্জেন্টিনার শট হেসুস কাস্তিলোর হাতে লাগায় পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। পারেদেসের জোরালো শট ফিরে আসে গোলবার থেকে।

পেনাল্টি মিস করে তিনি নাম লিখিয়েছেন ইতিহাসের খাতায়। বিগত ২৫ বছরে আর্জেন্টিনার জার্সিতে কোপা আমেরিকায় প্রথম পেনাল্টি (শ্যুটআউট ব্যতীত) মিস করলেন তিনি। এর আগে সবশেষ এমন মিস করেছিলেন রবার্তো আয়ালা। ১৯৯৯ সালে ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচে পেনাল্টি মিস করেছিলেন তিনি।

দ্বিতীয় গোলের জন্য আর্জেন্টিনাকে অপেক্ষা করতে হয় ৮৬ মিনিট পর্যন্ত। আবারও গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে চিপ শটে গোল করেন লাওতারো। টুর্নামেন্টে এটি তার চতুর্থ গোল।

শেষ পর্যন্ত সেই ২-০ গোলের জয়েই টানা তৃতীয় জয় নিশ্চিত করে গ্রুপসেরা হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা।

এই জয়ে গ্রুপ থেকে আর্জেন্টিনার সঙ্গে শেষ আটে যাচ্ছে কানাডাও। তারা অবশ্য গ্রুপ রানার্সআপ হয়েই নকআউটে যাচ্ছে। দলটি চিলিকে রুখে দিয়েছে গোলশূন্য ড্রয়ে।

এএইচ