শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণ
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩:৫৪ পিএম, ৭ জুলাই ২০২৪ রবিবার
২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের জামাতের আগে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় দুই পুলিশ সদস্য ও এক নারী নিহত হয়েছিলেন। পুলিশের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগে সেদিন বেঁচে যায় অসংখ্য মানুষের জীবন। এ ঘটনার ৮ বছরেও শেষ হয়নি বিচার কার্যক্রম।
নিহতদের স্মরণে প্রতিবছরের ন্যায় আজ রোববার জেলা পুলিশ শোলাকিয়া এলাকায় এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে পুলিশ, প্রশাসনের কর্মকর্তা, নিহতদের স্বজন, রাজনীতিক ও গণ্যমান্য লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
স্মরণসভায় জঙ্গিদের ভয়াবহ হামলা ও পুলিশের বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধের কথা স্মরণ করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বক্তারা। সভা শেষে নিহতদের স্মরণে মোনাজাত করা হয়।
স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ আফজল, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পারভেজ মিয়া প্রমুখ।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় নিহত পুলিশ সদস্যদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। পরে নিহত ঝর্ণা রাণী ভৌমিকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তার খোঁজ-খবর নেন তারা। এ সময় ঝর্ণা রাণীর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এ সময় সেখানে উপস্থিত নিহত ঝর্ণা রাণী ভৌমিকের স্বজনরা বলেন, শোলাকিয়া ঘটনায় যে মামলা করা হয়েছে, তার অগ্রগতি খুব সামান্য। আমাদের দাবি দ্রুত মামলাটির শুনানি শেষ করে রায় ঘোষণা করা হোক।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, এরই মধ্যে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। আশা করি, অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। নিহতদের পরিবার ন্যায়বিচার পাবে।
জঙ্গিদের হামলায় সেদিন পুলিশ সদস্য জহিরুল হক, আনসারুল হক, গৃহবধূ ঝর্ণারাণী ভৌমিক নিহত হন। আর পুলিশের গুলিতে মারা যায় আবির রহমান নামে সন্দেহভাজন এক জঙ্গি।
এ ঘটনায় তিন দিন পরে পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বাদী হয়ে ২০০৯ সালের সন্ত্রাস বিরোধী আইনের বিভিন্ন ধারায় কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেন।
জেলা পুলিশ জানায়, পরবর্তী সময়ে এ মামলায় মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়। বিভিন্ন সময়ে বন্দুকযুদ্ধে আসামিদের মধ্যে ১৯জন মারা যান। জীবিত পাঁচ আসামিদের মধ্যে দুজন গাজীপুরের কাশিমপুর, দুজন কিশোরগঞ্জ ও একজন রাজশাহী কারাগারে আটক রয়েছেন।
তারা হলেন জাহিদুল হক তানিম, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজিব গান্ধি, মিজানুর রহমান, আনোয়ার হোসেন ও মো. সবুর খান।
মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আগামী ৩১ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণের নতুন তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছেন আদালত। ১০১ সাক্ষীর মধ্যে ৬০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
এএইচ