ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

মহানায়ক বুলবুলের চিরবিদায়ের দিন আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:০২ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২৪ সোমবার

বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র বুলবুল আহমেদ। তার চিরবিদায়ের দিন আজ। ১৪ বছর আগে ২০১০ সালের এই দিনে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান গুণী এই অভিনেতা।  

মহানায়ক বুলবুল আহমেদের পারিবারিক নাম ছিল তাবাররুক আহমেদ। মা-বাবা আদর করে ডাকতেন ‘বুলবুল’। তার জন্ম ১৯৪১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর, পুরান ঢাকার আগামসি লেনে। তার বাবা খলিল আহমেদ ছিলেন, পাকিস্তান আমলের অর্থ বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি এবং অভিনেতা-নাট্যকার। মায়ের নাম মোসাম্মৎ মোসলেমা বেগম।

বুলবুল আহমেদ ঢাকার কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৫৭ সালে, ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৫৯ সালে, উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। নটর ডেম কলেজ থেকে ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে বিএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগ থেকে ১৯৬৩-তে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের বার্ষিক নাটকে অভিনয় করতেন তিনি। একসময় গ্রুপ থিয়েটার ড্রামা সার্কেল নাট্যগোষ্ঠীর স্বক্রিয় সদস্য হয়ে যান।

১৯৭৩ সালে আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমামের (ইউসুফ জহির) ‘ইয়ে করে বিয়ে’র মাধ্যমে প্রথম বড়পর্দায় অভিনয় শুরু করেন ঢালিউড মহানায়ক বুলবুল আহমেদ। এর পরের বছর আবদুল্লাহ আল-মামুনের ‘অঙ্গীকার’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। দুটি সিনেমাই সেই সময় দারুণ সুপার হিট হয়।

তবে বুলবুল দর্শকদের কাছে চিরদিন শ্রদ্ধেয় হয়ে আছেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি দুই চরিত্র ‘শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’-এ দুর্দান্ত অভিনয় গুণে। ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’ এ দুটি সিনেমা দিয়ে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন সব শ্রেণির দর্শকদের হৃদয়ে।

এ ছাড়া ‘মহানায়ক’, ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘সূর্যকন্যা’ সিনেমাগুলোতে বুলবুল আহমেদ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন অনন্য উচ্চতায়। তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালক হিসেবেও সফলতা অর্জন করেন। তার পরিচালিত ‘ওয়াদা’, ‘মহানায়ক’, ‘ভালো মানুষ’, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’, ‘আকর্ষণ’, ‘গরম হাওয়া’, ‘কত যে আপন’ সিনেমাগুলো আলোচিত হয়েছে। 

বুলবুল আহমেদ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি কয়েকটি ছবিও প্রযোজনা- পরিচালনা করেছেন। তার প্রযোজিত ও পরিচালিত ছবি- মহানায়ক, ভালো মানুষ, রাজলক্ষ্মী-শ্রীকান্ত, আকর্ষণ, গরম হাওয়া, কত যে আপন প্রভৃতি।

বুলবুল আহমেদ চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। সীমানা পেরিয়ে (১৯৭৭), বধু বিদায় (১৯৭৮), শেষ উত্তর (১৯৮০) ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা এবং দীপু নাম্বার টু (১৯৯৬) ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

রূপালী সৈকতে (১৯৭৯), দেবদাস (১৯৮২), ফেরারী বসন্ত (১৯৮৩), রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে পেয়েছেন, বাচসাস চলচ্চিত্র পুরস্কার।

পারিবারিক জীবনে বুলবুল আহমেদ ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে ফৌজিয়া আহমেদ ডেইজিকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির তিন সন্তান। মেয়ে ঐন্দ্রিলা ও তিলোত্তমা এবং ছেলে শুভ। নায়ক বুলবুল আহমেদের স্মৃতিকে ধরে রাখতে এবং প্রবীণ শিল্পীদেরকে সম্মানিত করার প্রয়াসে, পরিবারের পক্ষ থেকে গঠিত হয় বুলবুল আহমেদ ফাউন্ডেশন।

এসবি/