একুশে টেলিভিশনে সায়মন ড্রিং এর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:০৪ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২৪ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৮:০৮ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২৪ মঙ্গলবার
একুশে টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়মন ড্রিং এর কারণে বাংলাদেশ আধুনিক সাংবাদিকতায় প্রবেশ করেছে বলে মন্তব্য করছেন একুশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হাসান অভি। সায়মন ড্রিং এর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে একুশে টেলিভিশনের উদ্যোগে স্মরণসভায় এই মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের তথ্য বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন কালজয়ী এই সাংবাদিক। একুশে টেলিভিশনের পরিচালক একে এম শহীদুল্লাহ, এডিটর ইন চিফ রাশেদ চৌধুরীসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে সায়মন ড্রিং এর আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু, বিদেশি সাংবাদিক সাইমন ড্রিংয়ের তৃতীয় প্রয়াণ দিবস আজ। তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৯৭১ সালের মার্চে পাকিস্তানী সেনাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তিনি রণাঙ্গণে বর্বর বাহিনীর নির্মমতার চিত্র ক্যামেরাবন্দি করে বিশ্বে বাঙালিদের পক্ষে জনমত গঠনে জোরালো ভূমিকা পালন করেন।
পরবর্তীতে ২০০০ সালে বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি একুশে টেলিভিশন প্রতিষ্ঠার কান্ডারিও ছিলেন।
স্বাধীনতার প্রশ্নে তখন উতপ্ত ঢাকা। ৬ মার্চে সাইমন ড্রিং এলেন বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসকি ৭ মার্চের ভাষণ কাভার করতে। লাখো বাঙালির উদ্দীপ্ত চোখে তিনি বঙ্গবন্ধুকে দেখলেন। নিজেও মুগ্ধ হলেন। কম্বোডিয়ায় ফেরত যাবার কথা থাকলেও তিনি ফিরলেন না।
তিনি বাঙলার খবর, দৈনন্দিন ঘটনাপ্রবাহ পাঠাতে থাকলেন লন্ডনে। ২৫ মার্চ হত্যাযজ্ঞ শুরু হলে সাইমন ড্রিং আত্মগোপনে ঢাকা ও বাইরের সংবাদ সংগ্রহে বেরিয়ে পড়েন। বাঙালি নিধনের সেইসব রোমহর্ষক চিত্র ও সংবাদ ডেইলি টেলিগ্রাফ হয়ে প্রায় সব আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ছাপা হতে থাকে।
শুধু প্রতিবেদনই নয় কলামও লেখেন। বিশ্ববাসী জানতে পারে নির্যাতিত বাঙালির কথা। জনমত গড়ে ওঠে স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে। ৩০ মার্চ তাকে লন্ডন ফিরে যেতে হলেও তিনি কোলকাতায় অবস্থান নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের খবর সংগ্রহ ও প্রকাশ করতে থাকেন।
এরপর আবারও ঢাকা তথা বাংলাদেশ পায় তাকে। দেশের প্রথম টেরিস্টিরিয়ার স্যাটেলাইট চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের পত্তন হয় তাঁরই হাত ধরে। ঘুরে যায় স্বাধীন, স্বকীয় সাংবাদিকতার মোড়। তবে এই সুদিন বেশিদিন থাকলো না। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০২ সালে বন্ধ করে দেয় একুশে টেলিভিশন। একরকম দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয় বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু সাইমন ড্রিংককে।
২০২১ সালের ১৬ জুলাই রোমানিয়ার একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় মারা যান তিনি। এই কালজয়ী ব্রিটিশ সাংবাদিক একাত্তরে দুঃসাহসী ভূমিকার জন্যে বাঙালির স্মৃটিপটে অমর হয়ে থাকবেন।
কেআই//