ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে মৃতদের জীবিত রাখার নতুন সংস্কৃতি
দুলি মল্লিক
প্রকাশিত : ১২:৩৮ পিএম, ২৭ জুলাই ২০২৪ শনিবার
মৃতরা পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে ভারচুয়াল প্লাটফর্মে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ডেডবট, অ্যাভাটর ও ভারচুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে মৃতদের জীবিত রাখার নতুন সংস্কৃতি চালু হয়েছে বিভিন্ন দেশে। প্রিয় মানুষটিকে ডিজিটাললি বাঁচিয়ে রাখতে হাজার হাজার ডলার খরচ করছে মানুষ। ব্যবসা বাড়ছে এআই ফার্মগুলোরও।
তবে প্রযুক্তির এ ধরনের ব্যবহার নৈতিকতা ইস্যুতে প্রশ্নবিদ্ধ। ইতিবাচক দিক থাকলেও অনেকে এআইয়ের উন্নত মাত্রার এ যাত্রা নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন।
মৃত মেয়ের সঙ্গে মায়ের পুনর্মিলন। তিন বছর আগে রক্তজনিত রোগে মারা যায় সাত বছর বয়সী না-ইয়ন। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও অ্যাভাটর প্রযুক্তি ব্যবহার করে মৃত্যুর তিন বছর পর মেয়েকে নতুন করে ফিরে পান কোরিয়ান মা জ্যাং জি-সুং
চীনেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে হঠাৎ স্ট্রোকে মারা যাওয়া একমাত্র সন্তান ২২ বছর বয়সী জুয়ানমোকে পুনরুজ্জীবিত করেন তার বাবা-মা।
অবিকল জুয়ানমোর মতো দেখতে, কথাবার্তার ধরনও এক। শক্তিশালী অ্যালগরিদম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে জুয়ানমোর এই অ্যাভাটর। চীনের এআই ফার্ম সুপার ব্রেইনের প্রতিষ্ঠাতা জানান, ১ হাজার ৪শ’ থেকে ২ হাজার ৮শ’ ডলারে ২০ দিনে একজন ব্যক্তির প্রাথমিক অ্যাভাটার তৈরি করে দিতে পারেন তারা।
শুধু চীন নয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মৃতদের এমন অ্যাভাটর, টু-ডি, থ্রি-ডি প্রজেক্টশন, হলোগ্রাম তৈরির প্রবণতা বাড়ছে। মৃতদের সাথে চ্যাট করার জন্য তৈরি হয়েছে এআই ডেডবটও। যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ১২৫ থেকে ৬২৫ ডলার খরচ করলেই সিরি’র মতো কথা বলতে পারবে মৃত মানুষ।
গবেষকরা জানান, মহামারী করোনাকালীন সময়ে মূলত প্রিয়জনকে শেষ বিদায় জানাতে এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়, যা এখন ব্যাপক রূপ পেয়েছে।
ইতিহাস-তথ্য সংরক্ষণ ও আগামী প্রজন্মের জন্য মৃতদের পুনরুজ্জীবিত করার এসব প্রযুক্তিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে।
তবে নৈতিকতা নিয়ে বির্তক বাড়ছে। মৃতদের সাথে এ ধরনের যোগাযোগে মানুষ প্রস্তুত কিনা বা এর মানসিক ক্ষতি কতোটা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
একইসঙ্গে আগামীতে আইএ তার উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ম্যাট্রিক্সের মতো কোনো আলাদা জগত তৈরি করতে পারে- এ নিয়েও শংকা রয়েছে।
এএইচ