ঢাকা, বুধবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ২০ ১৪৩১

মুরগি চুরির অপবাদ দিয়ে মেয়ে-মাকে নির্যাতন, হাসপাতালে ভর্তি

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:২৮ এএম, ২৮ জুলাই ২০২৪ রবিবার

বাগেরহাটের শরণখোলায় মুরগি চুরির অপবাদ দিয়ে কিশোরী মেয়ে ও মাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। নির্যাতিত কিশোরী লামিয়া ও তার মা বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।  

শনিবার (২৭ জুলাই) বিকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত কিশোরী লামিয়া আক্তার বলেন, ‘মা অনেক দিন ধরে অসুস্থ। বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের ওষুধ কিনতে বাজারে যাওয়ার পথে স্থানীয় মাওলানা আশ্বাপ আলী আমাকে ডেকে তার বাড়ি নিয়ে যান এবং মুরগি চুরি করেছি বলে মারধর করে। পরে তারা ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য তপু বিশ্বাসকে ডেকে নিয়ে আসে। তিনি এসে কোনকিছু না শুনে প্রথমে লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করে। পরে হাত-পা বেঁধে পায়ের তলায় পিটাতে থাকেন।’

লামিয়া আরও বলেন, ‘এর এক পর্যায়ে মা আসলে, তাকেও বেঁধে মারধর করেন তপু বিশ্বাস। মুরগি চুরির জরিমানা হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, না হলে আবারও মারধর করা হবে বলে হুমকি দেন তিনি। মারধর শেষে আমার গলায় ধারালো দা ধরে, মুরগি চুরি করেছি বলে স্বীকারোক্তি দিতে বলে। বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে আমি মুরগি চুরি করেছি, বলে স্বীকারোক্তি দেই।’

নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী আরও বলেন, ‘আমি কখনও মুরগি চুরি করিনি। আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে। আমি এই অন্যায়ের বিচার চাই।’

নির্যাতনে অসুস্থ্য হয়ে ওই কিশোরীর মা লাইলি বেগমও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ইউপি সদস্য  তপু বিশ্বাস আমাকে ও মেয়েকে আলাদা ঘরের মধ্যে বসিয়ে হাত বেধে মারধর করেছে। আমার বাচ্চা মেয়েকে যেভাবে পিটিয়েছে তা কোন মা সহ্য করতে পারে না। আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে। আমরা এই অন্যায়ের বিচার চাই।’

এদিকে, এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ধানসাগর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তপু বিশ্বাস বলেন, ‘স্থানীয়রা মুরগি চোর ধরেছে বলে আমাকে খবর দেয়। ঘটনাস্থলে অনেক লোকজন ছিল৷ আমি থানার তদন্ত ওসিকে ফোন দিয়েছিলাম। তিনি বলেছেন স্থানীয়দের নিয়ে মীমাংসা করে ফেলতে। ঘটনাস্থলে যারা ছিল তাদের সমন্বয়ে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে শুনি রাতে তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আসলে তাদের নির্যাতন করা হয়নি।’

বাগেরহাট  ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডাঃ পার্শা সানজানা বলেন, নির্যাতনের শিকার মা-মেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা তাদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের অবস্থা এখন কিছুটা ভাল। 

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান বলেন, ঘটনা শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এএইচ