ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৪ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ২৯ ১৪৩১

এসএসসি পাসেই মেডিসিন, শিশু ও সার্জারির বিশেষজ্ঞ ডাক্তার!

মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:৪০ এএম, ৩১ জুলাই ২০২৪ বুধবার | আপডেট: ১১:৪৪ এএম, ৩১ জুলাই ২০২৪ বুধবার

এসএসসি পাস করেই বনে গেছেন অভিজ্ঞ ডাক্তার। রীতিমত চেম্বার খুলে রোগীদের দিচ্ছেন চিকিৎসা। প্রেসক্রিপশন প্যাডে ডি.এম.এফ (ঢাকা)র পাশাপাশি মেডিসিন, শিশু এবং অর্থো সার্জারি রোগে অভিজ্ঞ কথাটি লেখা রয়েছে। করেন কাটাছেড়ারও চিকিৎসা। তিনি হলেন মাদারীপুর ডাসার উপজেলার সোহাগ ডাক্তার।

মাদারীপুর জেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার অদূরে ডাসার উপজেলার কমলাপুর গ্রাম। এখানে বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। আশেপাশে নেই কোন ভাল চিকিৎসা ব্যবস্থা। এই এলাকার বাসিন্দা সোহাগ তালুকদার। 

এসএসসি পাস করে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ডি.এম.এফ কোর্স করেন। এরপর মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ইন্টার্নী শেষ করে নিজ গ্রামের কমলাপুর নতুন বাজারে চেম্বার খুলে রোগী দেখা শুরু করেন। নিজেকে ডাক্তার হিসাবেই পরিচয় দেন তিনি। তার সাইনবোর্ড ও প্রেসক্রিপশনে মেডিসিন, শিশু এবং অর্থো সার্জারি রোগে অভিজ্ঞ লিখে রেখেছেন। 

গ্রামের সহজ সরল মানুষ তাকে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মনে করে আসেন চিকিৎসা নিতে। সোহাগ ডাক্তার নিজ চেম্বারে বসেই বিভিন্ন রোগের চিকিৎসাসহ কাঁটা-ছেড়া রোগীর চিকিৎসা করেন। প্রয়োজনে সেলাইও করে দেন তিনি। তাই স্থানীয় সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল সোহাগ ডাক্তার।

স্থানীয়রা জানান, এই এলাকার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমেই নিয়ে আসে সোহাগ ডাক্তারের কাছে। সোহাগ ডাক্তারই আমাদের চিকিৎসা করান। বড় ধরণের রোগ হলেই আমরা মাদারীপুর, বরিশাল, ফরিদপুর বা ঢাকায় যাই। কোন দুর্ঘটনায় কেঁটে গেলে সোহাগ ডাক্তার সেলাই করে দেয়। 

সোহাগ তালুকদার ওরফে সোহাগ ডাক্তার বলেন, আমার মেডিসন, শিশু এবং অর্থো সার্জারি রোগ বিষয়ে অভিজ্ঞতা আছে বলেই সাইনবোর্ড ও প্রেসক্রিপশন প্যাডে এ সকল রোগে অভিজ্ঞ কথাটি লিখেছি। অনেক ডাক্তারই তো বিভিন্ন রোগের না উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞ কথাটি লেখে তাই আমিও লিখেছি। এটা লেখা যদি অন্যায় হয় তাহলে আমি আর লিখব না।

মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণা করে অবৈধভাবে চিকিৎসা সেবা দিলেও কথিত ডাক্তার সোহাগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে উদাসিন জেলার সিভিল সার্জন। সিভিল সার্জন বলেন, ডিএমএফ ডিপ্লোমাকারীদের ডাক্তার লিখতে নিষেধ করা হয়েছে। যেহেতু এ বিষয়ে আদালতে একটি রিট চলছে তাই বলেছি রিটের রায় না হাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা যেন তাদের নামের আগে ডাক্তার শব্দটি ব্যবহার না করেন। যেহেতু তার ডাক্তার লেখার রাইট নাই তাহলে বিশেষজ্ঞ লেখার বিষয়টি অমূলক। 

সোহাগ ডাক্তারের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের অনুমোদিত কাজের বাহিরে যদি কোন কাজ করে তাহলে আমরা বিএমডিসিকে অবহিত করব। তবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

যারা প্রতারণা করে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষকে সঠিক চিকিৎসা সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করবে এমনটাই আশা মাদারীপুরবাসীর।

এএইচ