ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   আশ্বিন ৩ ১৪৩১

গুজব থেকে সাবধান

এম আর রুবেল 

প্রকাশিত : ০৬:২০ পিএম, ১৫ আগস্ট ২০২৪ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৬:৩৪ পিএম, ১৫ আগস্ট ২০২৪ বৃহস্পতিবার

চারদিকে গুজব। ব্যাক্তিস্বার্থ, রাজনৈতিক স্বার্থসহ নানা স্বার্থে যে যার মতো ছড়িয়ে দিচ্ছেন গুজবের ডালপালা। যা আতংকিত করছে সাধারণ মানুষকে। 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভাবে বেশ কিছু  অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে দেশে।

এরমধ্যে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর কিছু আক্রমণ করা হয়। হামলা হয়েছে আওয়ামী সরকার সমর্থিত নেতা কর্মীদের বাড়িতেও। ঐতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশের হিন্দুরা আওয়ামী লীগের সমর্থক এবং তাদেরও বেশ কিছু নেতা রয়েছে যেখানে দুষ্কৃতকারীরা হামলা করেছে হিন্দু হিসেবে নয়, আওয়ামী লীগ হিসেবে। 

কিন্তু দেখা গেছে হামলা সহিংসতা নিয়ে এখন শুরু হয়েছে নোংরা রাজনীতি। যেখানে গুজব ছড়িয়ে ধর্মকে ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। 

বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ। এদেশের মানুষ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একসাথে বসবাস করে। তাই সহিংসতার সময় দেখা গেছে সাধারণ ছাত্র জনতা, এমনকি মাদ্রাসার ছাত্ররাও মন্দির এবং হিন্দুদের সম্পত্তিগুলো পাহারা দিয়েছে। রক্ষা করেছে অনেকের বাড়ি ঘর সম্পত্তি। 

কিন্তু এরমাঝেও ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে অতিরঞ্জিত খবর। মিথ্যা গুজব চারদিকে ছড়িয়ে দেখানো হচ্ছে ভয়। যা আতংকিত করছে মানুষকে। বাড়ছে সহিংসতা। যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।  

সুপ্রিয় পাঠক, কোন কোন হিন্দু স্থাপনা এবং বাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছে তার একটা লিস্ট, ছবিসহ প্রকাশ করা দরকার। ইন্টারনেটের যুগে কোন কিছুই লুকিয়ে রাখা যায় না। তাই যেখানে যা সহিংসতা হয়েছে তা প্রকাশ করা হোক। গুজব রটেছিল লিটন দাসের বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পরে লিটন দাস নিজেই বিবৃতি দিয়ে বলেছেন তার বাড়ি ভাংচুর করা হয়নি। 

সুপ্রিয় পাঠক, ভারতীয় মিডিয়ায় অবিশ্বাস্য রকম বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। তারা ভারতীয় জনগণকে বিভ্রান্তিমূলক ও মিথ্যা সংবাদ এর মাধ্যমে ভ্রান্ত ধারণা দিচ্ছে। এ বিষয়ে দেশের গণমাধ্যমকে তাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা দরকার। ভারতের সাথে পার্শ্ববর্তী কোনো দেশেরই সম্পর্ক ভালো নেই, এমনকি পৃথিবীর একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র নেপালের সাথেও তার সম্পর্ক অবনতির দিকে। ভারতের আধিপত্য মূলক ফরেন পলিসির কারণে ছোট ছোট দেশগুলোর সাথেও দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। তাই এখনই আমাদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। 

গত স্বৈরাচার সরকার রাজাকার বিষয়ে মিথ্যা রাজনীতি করতে গিয়ে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনেন। এতে সমাজের মধ্যে গভীর বিভেদ ও ক্ষতের সৃষ্টি  হয়। 

সবার প্রতি অনুরোধ ব্যাক্তি স্বার্থে অযথা গুজব ছড়িয়ে আর বিভেদ সৃষ্টি করবেন না যাতে করে সম্পর্কের অবনতি হয়।  বাংলাদেশের বেশিরভাগ জনগণ এবং বিশেষ করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমাজ সেকুলার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। সবাই চায় এখন দুর্নীতিমুক্ত অসাপম্রদায়িক এক লাল সবুজের বাংলাদেশ। 

তাই কোনো গুজব নয়, সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠে সকলে মিলে দেশটাকে এখন নতুন করে গড়া দরকার। এগিয়ে যাওয়া দরকার সামনের দিকে। তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে হাঁটতে চাই সবাই নতুন এক বিশ্বের দিকে। 

এসবি/ 

** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।