ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

ভয়াবহ ঋণের ফাঁদে দেশ, লাখ টাকার বোঝা প্রত্যেকের

আকবর হোসেন সুমন

প্রকাশিত : ১২:৪৭ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২৪ বুধবার | আপডেট: ০১:০৬ পিএম, ২১ আগস্ট ২০২৪ বুধবার

দেশের প্রতিটি নাগরিকের মাথায় এখন ১ লাখ ৯ হাজার টাকার ঋণ। এমনকি আজ যে শিশুটি জন্ম নিয়েছে, তার নামেও রয়েছে এই পরিমাণ ঋণের বোঝা। দেশের নাগরিকদের ঋণে জর্জরিত করে গেছে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকার। আর এসব-ই হয়েছে কথিত উন্নয়নের অজুহাতে। গেল ১৫ বছরে দেশি-বিদেশি উৎস থেকে সাড়ে ১৮ লাখ কোটি টাকা ঋণ করেছে বিদায়ী হাসিনা সরকার। 

ঋণ করে ঘি খেয়েছে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকার। তবে দেশের বেজেছে বারোটা। ভয়াবহ ঋণের ফাঁদে দেশ।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্যের দিকে নজর দিলে যে কারো চোখ কপালে উঠবে। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে যখন শেখ হাসিনা সরকার দায়িত্ব নেয়, তখন দেশি-বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। মাত্র ১৫ বছরের ব্যবধানেই সেই ঋণ এখন প্রায় ১৮ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। 

উন্নয়নের নমে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকার প্রতিটি নাগরিকের মাথায় চাপিয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৮শ’ 
টাকার ঋণ। 

জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া এই ঋণের ১০ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা নেয়া হয়েছে দেশীয় উৎস থেকে। আর বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে বিদায়ী হাসিনা সরকার নিয়েছে প্রায় ৮ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরেও দেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৩ লাখ ২০ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। কিন্তু ৬ বছরের ব্যবধানে দেশীয় উৎসের এই ঋণও বেড়ে ৩ গুণ হয়েছে। 

অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম রায়হান বলেন, “এইসব ঋণ যেসব পরিস্থিতিতে নেওয়া হয়েছিল তাতে মনে হয়েছে একটি গোষ্ঠীর স্বার্থ প্রাধান্য পেয়েছে। এখানে লুটপাট বা দুর্নীতির বড় উদ্দেশ্য ছিল। সেখান থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদেরকে এখন বাস্তবতার নিরিখে একটা পর্যালোচনা দরকার। এর উপর ভিত্তিতে করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেয়া উচিত।”

কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদুৎকেন্দ্র, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পাশাপাশি রেল ও বিদ্যুৎ খাতে ভারত, চীন, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও দেশের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে বিদায়ী হাসিনা সরকার। এমনকি পদ্মা সেতু নিজের টাকায় করার দাবি করলেও সেটিও হাসিনা সরকার করেছে দেশি-বিদেশি ঋণেই। 

ড. সেলিম রায়হান বলেন, “এতো বিশাল পরিমাণের ঋণ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের নামে নেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পের অনেকগুলো বাস্তবতার নিরিখে পর্যালোচনা করা হয়নি।”

অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেয়া ঋণের বড় অংশই ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা-সরকার নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে। এতে বাজারে অর্থের সরবরাহ বেড়েছে, কমছে টাকার মান। বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম। 

এএইচ