ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

প্রভাবশালীদের লুটপাটে নাজুক দেশের ব্যাংকিং খাত

রাজিব জামান

প্রকাশিত : ১১:৫৮ এএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার

লুটপাটে নাজুক দেশের ব্যাংকিং খাত। লাফিয়ে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। প্রভাবশালীরা ঋণের অর্থ ফেরত না দেয়ায় বড় সংকটে ব্যাংক। চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। সাবেক স্বৈরশাসক হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা।

হু হু করে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। গত ১৫ বছরের ঋণ-জালিয়াতির কারণে ধুকছে দেশের ব্যাংক খাত। ২০০৯ সালে খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল ২২ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। যা ক্ষমতাচ্যুত হাসিনার ১৫ বছরে বেড়ে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আইনুল ইসলাম বলেন, “আমাদের বাজেট হচ্ছে ৭-৮ লাখ কোটি টাকা, এর মধ্যে যদি এক-তৃতীয়াংশ হয় খেলাপি তাহলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কিভাবে চলবে। এখন প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট কমে গিয়েছে, ইনভেস্টমেন্ট কমা মানে নিয়োগ কমে যাওয়া। তাতে বেকার সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের স্থিতি ছিল ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। এই ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশেই এখন খেলাপি। 

সবচেয়ে বেশি খেলাপি রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকে। ৩২ দশমিক ৭৭ শতাংশ। দেশি বেসরকারি ব্যাংকে খেলাপির হার ৭ দশমকি ৯৪ শতাংশ। হাসিনা ঘনিষ্ট প্রভাবশালীরা ঋণ ফেরত না দেয়াতেই খেলাপির এই উল্লম্ফন।

এদিকে, গত ১৫ বছরে পুনঃতফসিল, পুনর্গঠন, অবলোপনসহ বিভিন্ন নীতিমালার উদার ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সময়ে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র ধামাচাপা দেয়া হয়েছে। এস আলম, সালমান এফ রহমান, নজরুল ইসলাম মজুমদারের মতো প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ‘মালিকানায়’ থাকা ব্যাংকগুলোতে অবাধে লুটপাট হয়েছে হাসিনা সরকারের আমলে।

অনিয়ম-দুর্নীতিতে বিপর্যস্ত এসব ব্যাংকের প্রকৃত চিত্র সামনে এলে অনেক ব্যাংক চরম অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এএইচ