ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ইবির হলে শর্ট সার্কিট, আতঙ্কে জ্ঞান হারালেন ছাত্রী

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:৩২ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) খালেদা জিয়া হলে শর্ট সার্কিট থেকে প্রায়ই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। গত রাতে এরকম এক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো হলে। এসময় জ্ঞান হারায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টায় শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া হলে। এসময় অন্ধকার হয়ে পড়ে হলটি। এসময় আতঙ্কিত হয়ে জ্ঞান হারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২২-২৩ বর্ষের শিক্ষার্থী রুনা লায়লা। 

পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য।

এ বিষয়ে কর্মরত ডাক্তার মো: রবিউল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই হলে এমন শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। আতঙ্কিত হয়ে প্যানিক অ্যাটাক হয়েছিল এক শিক্ষার্থীর। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আবার তাকে হলে পাঠিয়েছি। এখানে ভয়ের কিছু নেই।

নিয়মিত শর্ট সার্কিট ঘিরে বিচ্ছিন্নভাবে আগুনের স্ফুলিঙ্গ, রাতে হঠাৎ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসা যেনো ইবির খালেদা জিয়া হলের নিয়মিত ঘটনা। রীতিমতো আতঙ্কে সময় পার করছেন হলের আবাসিক ছাত্রীরা। 

এখন শিক্ষার্থীদের হলে অবস্থান করাটাও বিপদজনক মনে করছেনে অনেকেই। ফলে হলের পুরাতন ব্লকটি পরিত্যক্ত নাকি সংস্কার করে পুনর্বাসন করা হবে তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এর আগে ২ লাখ টাকার সংস্কারমূলক কাজ করা হলেও মেলেনি উপযুক্ত সুরাহা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের হলে প্রায়দিনই শর্টসার্কিট হচ্ছে। এর আগে ঈদের ছুটির পর আগুন লাগলো তারপরেও প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। প্রতিদিন প্রশাসনের কাছে যাওয়া হচ্ছে তারপরেও তাদের কোনো রেসপন্স পাওয়া যাচ্ছে না। যদি কারো কিছু হয়ে যায় তাহলে এর দায়ভার কে নিবে?

হলে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের দাবি, যতদিন পর্যন্ত এই ইলেক্ট্রিসিটির সমাধান না হবে ততদিন তাদের জন্য ডরমিটরিতে যেনো থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। তারা তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রশাসনের নিকট।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) এ. কে. এম শরীফ উদ্দীন বলেন, খালেদা জিয়া হলে আমাদের সার্বক্ষণিক ইলেক্ট্রিশিয়ান নিয়োজিত ছিল। গতকাল মেয়েরা হঠাৎ হট্টগোল করলে ইলেক্ট্রিশিয়ান পুরো ৫ তলা বিল্ডিং খোঁজাখুঁজি করে কোথাও কোনো সমস্যা বের করতে পারেনি। আতঙ্কিত হয়ে মেয়েরাই সার্কিট ব্রেকার অফ করে দিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, এইটা অনেক পুরোনো একটি হল। এখানে যে সমস্যা হচ্ছে তার সমাধানের জন্য নতুন করে পুরো বিল্ডিং আবার ওয়ারিং করতে হবে। তবে এখন সাময়িক সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সার্বক্ষণিক একজন ইলেক্ট্রিশিয়ান রাখা আছে হলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন, গত রাতের ঘটনাটি আমি অবগত। আমাদের একজন ইলেক্ট্রিশিয়ান ওখানে ছিল এবং হাউজ টিউটর উপস্থিত ছিলেন। তবে কোনো ত্রুটি খোঁজে পাওয়া যায়নি। ভয় থেকে মেয়েরা অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল।

নারী শিক্ষার্থীদেরকে ডরমিটরিতে স্থানান্তর করা যায় কি না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ডরমিটরিতে যে কয়টা রুম রয়েছে তাতে হয়তো ৪০-৫০ জন মেয়েকে আমরা জায়গা দিতে পারবো। সেখানকার সকল মেয়েকে এখানে রাখা কষ্টকর হয়ে যাবে। আমরা আলোচনা করছি, কিভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়। আগামী কার্যদিবসে আশা করি সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।

এএইচ