ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১

কমপ্লিট শাটডাউনে মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ, প্রশ্নবিদ্ধ আন্দোলন

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:৩১ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৩:৪৭ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার

অধ্যক্ষ ডা. সৈয়দ জাকির হোসেনসহ চার শিক্ষক পদত্যাগের দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউনে অচল হয়ে পড়েছে নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ। তবে এই আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে।

তবে এই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ইমন মুৎসুদ্দি একজন ছাত্রলীগ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, নিজের বহিষ্কার আদেশ ঠেকানোর জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলনে নামেন ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহ-সম্পাদক ইমন। 

তার নেতৃত্বে আন্দোলন যতটা না বেগবান হয়েছে, তার চেয়ে বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মনে করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এর আগে নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকায় এই ছাত্রলীগ নেতা ইমনকে তিনবার নোটিশ দিয়েছে মেডিকেল কলেজ প্রশাসন। সদ্য শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করায় তাকে ২ বছরের বহিষ্কার আদেশ দেওয়া হয়। তিনি তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য কৌশলে অধ্যক্ষসহ চার শিক্ষকের অপসারণের আন্দোলনে নামেন। তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে কটুক্তি করার প্রমাণও রয়েছে। 

এছাড়া শিক্ষকদের সঙ্গে অশ্রাব্য ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার প্রমাণও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

সার্জারি বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ কামরুল হোসাইন বলেন, ইমন অধ্যক্ষকে বাবা-মায়ের নাম ধরে গালি দিয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিলে যখন তাকে প্রশ্ন করা হয় সে সোজা বলে, আমি গালি দিয়েছি। তারপর তাকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, বর্তমান ছাত্রলীগের কমিটির সহ-সম্পাদক হলেন ইমন মুৎসুদ্দি। তার কথাবার্তা ও আচার-আচরণ খুব খারাপ। নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্য সে ছাত্রদের দিয়ে আন্দোলন করছে। তার বহিষ্কারাদেশ যখন প্রত্যাহার করা হয়নি তখনই সে কমপ্লিট শাটডাউনে নামে। 

নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে শিক্ষার্থীর ক্ষতি করছে। কলেজ ক্যাম্পাসটাকে অশান্ত করে তুলছে, এছাড়া সে কৌশলে বৈষম্যবিরোধী সফল ছাত্র আন্দোলনকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে জানান ওই শিক্ষার্থী।

আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডা. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, এই ইমন সাধারণ শিক্ষার্থীদের দিয়ে শান্ত ক্যাম্পাসটাকে অশান্ত করে তুলেছে। যেসব শিক্ষক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কোনো অবস্থায় যায়নি তাদেরকে নিয়েও সে কুৎসা রটাচ্ছে। সে নানান অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেওয়ায় সে এখন প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেই যাচ্ছে।

বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাখ্যা চন্দ্র দাস বলেন, সে একজন ছাত্রলীগের পদধারী নেতা। ছাত্রলীগকে ভিন্ন ব্যানারে কলেজে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছে সে। সে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটুক্তি করেছে। তার বিরুদ্ধে আমি নিজে বাদী হয়ে আইসিটি আইনে মামলার করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

এমন অভিযোগের বিষয়ে ইমন মুৎসুদ্দি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই নানান কথা ছড়ানো হচ্ছে। খালেদা জিয়াকে নিয়ে যে পোস্ট করেছি তা আমি ডিলিট করেছি। পাশাপাশি তার জন্য আমি ফেসবুকে এসে ক্ষমাও চেয়েছি।

এএইচ