গোপালগঞ্জে হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা নিহত, আহত ৩৫
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:২৮ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ শনিবার | আপডেট: ১২:৩০ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ শনিবার
গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানীর গাড়িবহরে হামলায় একই কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী (দিদার) নিহত হয়েছেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এতে সাংবাদিকসহ আরও অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সদর উপজেলা ঘোনাপাড়া মোড়ে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
আহতদের মধ্যে ১৬ জনকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল, ৩ জনকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা হাসপাতালে ও ৩ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্যান্যদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তবে এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের বেদগ্রাম মোড়ে পথসভা শেষে গাড়ি বহর নিয়ে টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। এসময় তাদের গাড়িবহর সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া মোড়ে পৌঁছালে আওয়ামী লীগের ব্যানার ফেস্টুন ছেড়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে বিবাদে জড়ায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী ও তার স্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্নাসহ ৩৫ জন আহত হন। এছাড়াও কয়েকটি গাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করতে গেলে সময় টিভির ক্যামেরাপার্সন এইচ এম মানিক আহত হয়।
সংঘর্ষের ৩ ঘণ্টা পর ঘোনাপাড়া থেকে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত হোসেন দিদারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট তৌফিকুল ইসলাম বলেন, বোদগ্রামের পথসভা শেষ করে গাড়ি বহর নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস. এম, জিলানীর বাড়ি টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছিলেন। এ সময় গাড়ি বহরে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ৩৫ জন আহত হয়।
সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম লেলিন বলেন, টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার পথে ঘোনাপাড়া মোড়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানী, তার স্ত্রী রওশন আরা রত্নাসহ অনেকে আহত হয়েছেন।
গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্না বলেছেন, স্বৈরাচারের দোসররা পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমার ছোট বাচ্চাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। এতে আমাদের অনেক নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন।
গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান বলেন, বেদগ্রামের পথসভা শেষে গাড়িবহর নিয়ে গ্রামের বাড়ি টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছিলেন স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানী। এসময় ঘোনাপাড়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত হোসেন দিদার নিহত হন ও ৩৫ জন আহত হন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি সমাবেশ করবে এজন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশকে জানানো হয়েছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েই এই সভা করেছি। কিন্তু তারপরেও হামলা ঘটনা ঘটলো। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ইলিয়াস হকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত হোসেন দিদার নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস.এম জিলানীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
কেআই//