বিস্ময়কর দুর্নীতিবাজ ও নির্মমতার নাম ডিবি হারুন
আশরাফ শুভ
প্রকাশিত : ০১:১২ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রবিবার | আপডেট: ০১:১৩ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রবিবার
পুলিশ প্রশাসনের এক বিস্ময়কর দুর্নীতিবাজ ও নির্মমতার নাম ডিবি হারুন। পুরো নাম হারুন অর রশীদ। ‘ভাতের হোটেল হারুন’ নামেও সমধিক পরিচিতি তার। সর্বশেষ ডিএমপিতে গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় বরখাস্ত হন ডিবি হারুন। শুনুন তার অবৈধ উত্থানের গল্প।
উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর রোডের মাথায় এই আটতলা ভবনে সপরিবারে থাকতেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ। শেখ হাসিনার পতনের পর ১০ কাঠার ওপর নির্মিত ভবনটির নেমপ্লেট খুলে রাখা হয়েছে।
উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাড়ি, ২০ নম্বর রোডে প্রাইম লেক ভিউ ভবনে জিআর মিট ও গ্রিট নামে ট্রাভেল এজেন্সি ও হোটেল, ৫ নম্বর সেক্টরের ৬ নম্বর রোডে ১০ কাঠার দুটি প্লট, ১০ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডে ৫ কাঠার প্লট এবং ১২ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাড়ির পঞ্চম তলায় অফিস ও সোনারগাঁও জনপথ রোডে ৬ তলা বাড়ি রয়েছে হারুনের।
উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের উত্তরা স্মৃতি কেবল টিভি লিমিটেডের পাশে একটি ৫ কাঠার প্লট, উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর রোডে ইন্ডোরা নামে ৫ তলা বাড়ি, শাহ মখদুম এভিনিউয়ে ১২ নম্বর প্লট ও সোনারগাঁও জনপথ রোডের ৭৯ নম্বর হোল্ডিংয়ের জমির মালিকানায় হারুন।
পাশাপাশি জমজম টাওয়ারের পাশে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরে ৪০টি ফ্ল্যাট, ১৪ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর রোডের ১৭ ও ১৯ নম্বর প্লটও হারুনের।
স্থানীয়রা জানান, বর্তমান সরকারের অনুরোধ করবো ওনার এই ৪০টি ফ্ল্যাট জব্দ করে সরকারি কোষাগারে নেওয়া হয়। এতে অর্থনীতির মন্দা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে।
এছাড়া নয়াপল্টনে মানি এক্সচেঞ্জ, দোকান গাজীপুরের সবুজপাতা রিসোর্ট, নিকুঞ্জের ৩ নম্বর রোডে রিক্রুটিং ও ট্রাভেল এজেন্সি, টঙ্গীর ২৭ মৌজায় ৮ বিঘা জমি, ছায়াকুঞ্জ আবাসিক প্রকল্পের ভেতর ১২ বিঘা জমি। হারুনের সম্পদের তালিকায় আরও রয়েছে কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট, গাজীপুরের সবুজপাতা রিপোর্ট। এছাড়া কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভে ৩৩ শতক জমির মালিকানায় আছেন হারুন, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার ও ভাই এ বি এম শাহরিয়ার।
সাভারের নন্দন পার্কেও হারুনের মালিকানা আছে। বনানী কবরস্থানের দক্ষিণ পাশে ২০ কাঠার প্লট দখল করে একটি কোম্পানির কাছে ৭০ কোটি টাকায় বিক্রি করেছেন হারুন। দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান আছে তার।
সাধারণ মানুষরা জানান, প্রেসিডেন্ট হাউস করার তার কোনো রাইট নাই, ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য এই ধরনের হাউস তৈরি করেছে।
সাভারের নন্দন পার্কেও হারুনের মালিকানা আছে। বনানী কবস্থানের দক্ষিণপাশে ২০ কাঠার প্লট দখল করে একটি কোম্পানির কাছে ৭০ কোটি টাকা বিক্রি করে হারুন। দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকানও আছে তার।
এছাড়া, হারুনের স্ত্রী শিরিন আক্তারের নামে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হওয়া ১ হাজার ৫৩২ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা এফবিআই আটক করেছে বলে জানিয়েছে দুদক।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়ক অঙ্গরাজ্যের নিউ হাইড পার্ক এলাকায় স্ত্রীর নামে পাঁচ মিলিয়ন ডলারের বাড়িও কিনেছেন হারুন।
সচেতন নাগরিকরা জানান, পুলিশের একজন কর্মকর্তা হয়ে ১৫ কোটি টাকা বিদেশি পাচার করে দিল, এটা অতি সত্তর দেশে ফেরত না দরকার।
হারুন তার চাকরি জীবনের ২৬ বছরে বেতন পেয়েছেন ২ কোটি ৩০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। কিন্ত প্রভাব খাটিয়ে তিনি হাজার হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন।
এএইচ