হাসিনা ক্ষমতার জন্য মানুষের বুকে গুলি চালিয়েছিল: গোলাম পরওয়ার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:০৭ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রবিবার | আপডেট: ০৯:০২ এএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সোমবার
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা গুলি করে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ নির্বিশেষে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার যে কোন কিছুর বিনিময়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে চেয়েছিল। এজন্য মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে। কিন্তু শেখ হাসিনা জানেন না, মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে দেশ পরিচালনা করা যায় না। ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে শেখ হাসিনা শুধু ক্ষমতাই নয়, দেশ ছেড়েও পালিয়ে গেছে।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শনিরআখড়ায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অত্যাচার নির্যাতনের পরও জামায়াত-শিবিরের কোন নেতাকর্মী কেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি? প্রশ্ন তুলে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াত নেতাকর্মীরা একমাত্র আল্লাহকে ভয় করে। কোন অন্যায়ের সঙ্গে কখনো আপোষ করেনি। জনগণের সম্পদ লুট করেনি। বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেনি। তারা জনগণের সম্পদকে আমানত মনে করে। তাই তারা দুর্নীতি করে না, চুরি করে না। জনগণের খেদমতে জীবন উৎস্বর্গ করে দেয়, দিয়েছে এবং প্রয়োজনে আরো দিবে।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেলেও তাদের দোসররা ছাত্র-জনতার বিপ্লব নসাৎ করতে কখনো জুডিসিয়াল ক্যু, কখনো আনসার ক্যু, কখনো প্রশাসনিক ক্যু চালাতে চেয়েছে। তবে জনতা তাদের এই অপচেষ্টা প্রতিরোধ করবে।
দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসররা হিন্দু সম্প্রদায়কে ভুল বুঝিয়ে মাঠে নামিয়ে দিতে চেয়েছে। গুজব ছড়িয়ে দিয়েছে তাদের মন্দির ভাংচুর হবে, বাড়িতে অগ্নিসংযোগ হবে। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের জানমালের নিরাপত্তায় আমীরে জামায়াতের নিদের্শে সারাদেশে জামায়াতের কর্মীরা নিয়োজিত ছিল। আগামীতেও জামায়াতের কর্মীরা তাদের পাশে থাকবে।
মতবিনিময় সভা শেষে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ১৭ জন শহীদের পরিবারের মাঝে ২লাখ টাকা করে ৩৪ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
এদিকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার নিদের্শে পুলিশের গুলিতে নিহত সৈকত চন্দ্র দে-র স্ত্রী স্বপ্না রানী দে বলেন, আমাদের বোঝানো হতো জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের বিতাড়িত করে দিবে। হিন্দুদের সম্পদ লুটপাট করে নিবে। কিন্তু আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতৃবৃন্দ আমার পরিবারের সার্বিক খোঁজ-খবর নিয়েছে। পাশে থেকেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্যরা খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও যাত্রাবাড়ী-মাতুয়াইল থানা আমীর মিজানুর রহমান মালেকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির ও সহকারী প্রচার সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমন। বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামী যাত্রাবাড়ী উত্তর থানা আমীর মো. শাহজাহান খান, ডেমরা উত্তর থানা আমীর মাওলানা মিজানুর রহমান, ডেমরা পশ্চিম থানা আমীর মাওলানা বায়োজীত হাসান, যাত্রাবাড়ী দক্ষিণ থানা আমীর এডভোকেট এ.কে আজাদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।