ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

ভারত মরিয়া, বাংলাদেশ শিবিরে শঙ্কা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:২৪ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সোমবার | আপডেট: ০৬:২৯ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সোমবার

কানপুর টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৮৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে ভারত। এর আগে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে করেছিল ২৩৩ রান। প্রথম ইনিংসে ভারতের লিড ৫২ রানের। 

ইনিংস ঘোষণার আগে ৩৪ ওভার ৪ বলে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রান করেছে ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭২ রান করেছেন জয়সাওয়াল। তাছাড়া ৬৮ রান করেছেন লোকেশ রাহুল।

বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে বাংলাদেশ মমিনুলের সেঞ্চুরির পরও ২৩৩ রানে অলআউট হওয়াটা অনেক বিশ্লেষকই সমালোচনা করেছেন। যেখানে আজকে সর্বোচ্চ সময় ব্যাটিং করার দরকার ছিল, সেখানে টাইগাররা একের পর উইকেট বিলিয়ে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। আর অপর দিকে অনেকটাই টিটোয়েন্টি স্টাইলে ব্যাট করে ভারত বাংলাদেশের রানকে টপকে যায় সহজেই। 

ভারতে এমন ব্যাটিং জানান দিচ্ছে, ম্যাচ জিততে কতটা মরিয়া তারা। অপরদিকে বাংলাদেশের অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটিং শঙ্কায় ফেলেছে পুরো দলকে, সমর্থকদের।

এর আগে চতুর্থ দিনে লাঞ্চের কিছুক্ষণ পরই নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামে ভারত। ইনিংসের প্রথম ওভার থেকেই আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে ব্যাটিং করেছেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও ইয়াশভি জয়সাওয়াল। প্রথম ওভারেই তিন বাউন্ডারি মারেন জয়সাওয়াল। দ্বিতীয় ওভারে স্ট্রাইক পেয়ে নিজের খেলা ইনিংসের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান রোহিত।

দুই ওপেনারের এমন ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দুই ওভারে ২৯, আর তিন ওভার শেষে ৫১ রান তুলে ভারত।  টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে কম বল খেলে দলীয় অর্ধশতকের রেকর্ড এটি। দ্রুততম ফিফটির এর আগের রেকর্ড ছিল ইংল্যান্ডের। ৪.২ ওভারে চলতি বছর নটিংহ্যামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫০ রান পূরণ করেছিল ইংল্যান্ড।

অবশ্য এরপরেই ব্রেকথ্রু পেয়েছে বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভার করতে এসে উইকেটের দেখা পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বোল্ড হওয়ার আগে রোহিতের ব্যাট থেকে এসেছে ১১ বলে ২৩ রান।

অধিনায়ক দ্রুত ফিরলেও আরেক ওপেনার জয়সওয়াল পেয়েছেন ফিফটির দেখা। হাসান মাহমুদের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৫২ বলে ৭৭ রান করেছেন এই তরুণ ওপেনার। তার এমন বিস্কোরক ব্যাটিংয়ে মাত্র ১০.১ বলেই দলীয় শতরান স্পর্শ করে ভারত। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে দ্রুততম শতরানের কীর্তি এটি। এর আগের রেকর্ডও অবশ্য ভারতের দখলেই ছিল। সেবারও ওপেনার ছিলেন রোহিত ও জয়সাওয়াল। ২০২৩ সালে পোর্ট অব স্পেনে ১২.২ ওভারে দলীয় শতরান স্পর্শ করেছিল ভারত।

তিনে নেমে রানের দেখা পেয়েছেন শুবমান গিলও। সাকিবের বলে হাসান মাহমুদের হাতে ধরা পড়ার আগে ৩৬ বলে করেছেন ৩৯ রান। দ্রুত রান তুলতে বিরাট কোহলির আগেই ঋষব পান্তকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল ভারত। তবে ব্যর্থ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ১১ বল খেলে ৯ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।

পাঁচে নেমে পরিকল্পনা অনুযায়ী ঝোড়ো ব্যাটিং করেছেন কোহলি। স্বভাব বিরুদ্ধ ব্যাটিংয়েও সফল এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। সাকিবের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৩৫ বলে করেছেন ৪৭ রান।

কোহলি হাফ সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেও মিডল অর্ডারে নেমে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন লোকেশ রাহুল। মাত্র ৩৩ বলে ফিফটি করেন তিনি। তাদের এমন ব্যাটিংয়ে মাত্র ২৪ ওভার ২ বলেই ২০০ রান পেরিয়ে যায় ভারত। যা টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো দলের দ্রুততম ২০০ রান। এরপর ২৮তম ওভারে বাংলাদেশের করা ২৩৩ রান টপকে যায় ভারত।

কোহলি ফেরার পর সাতে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রবীন্দ্র জাদেজা। ইনিংসের ৩৩তম ওভারে মিরাজের খানিকটা খাটো লেংথের বল টেনে খেলতে গিয়ে কভারে শান্তর হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে জাদেজার ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ বলে ৮ রান।

জাদেজার পর রাহুলকেও ফিরিয়েছেন মিরাজ। স্ট্যাম্পিং হওয়ার আগে ৪৩ বলে ৬৮ রান করেছেন তিনি। পরিস্থিতি অনুযায়ী যা ছিল দারুণ কার্যকরী। এরপর রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও আকাশ দীপ উইকেটে এসে দ্রুত শট খেলার চেষ্টা করেছেন। তবে কেউই খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। এই দুজন দ্রুত ফিরলে এক উইকেট হাতে রেখেই ইনিংস ঘোষণা করেন রোহিত শর্মা।

এসএস//