ইরানের তেল স্থাপনায় আক্রমণ নিয়ে আলোচনা চলছে, জানালেন বাইডেন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:১৮ এএম, ৪ অক্টোবর ২০২৪ শুক্রবার
ইরানের তেল স্থাপনায় সম্ভাব্য ইসরায়েলি আক্রমণ নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকরা বাইডেনকে প্রশ্ন করেছিলেন, ইসরায়েল কি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাব দিতে গিয়ে তেহরানের তেল স্থাপনায় আক্রমণ চালাবে? জবাবে বাইডেন বলেছেন, ''আমরা আলোচনা করছি।''
বাইডেনের এই মন্তব্যের পরেই আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম পাঁচ শতাংশ বেড়ে যায়।
বাইডেন অবশ্য বলেছেন সর্বাত্মক লড়াই এড়ানো যাবে বলে তিনি মনে করেন। বাইডেনের বক্তব্য, ''আমি মনে করি, আমরা তা এড়াতে পারব। তবে আমরা ইসরায়েলকে সাহায্য করব।''
বাইডেন বলেছেন, ''আজই কিছু হচ্ছে না।'' তিনি এটাও জানিয়েছেন, ইরানের পারমানবিক কেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলা তিনি সমর্থন করেন না।
জাতিসংঘে ইসরায়েলের দূত ড্যানি ড্যানন বৃহস্পতিবার সিএনএনকে বলেছেন, ''প্রত্যাঘাতের ক্ষেত্রে অনেক বিকল্প আছে। আমরা শীঘ্রই তেহরানকে আমাদের শক্তি কতটা তা দেখাতে পারব।''
মঙ্গলবার ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে ইরান। তারপরেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছিলেন, তারা প্রত্যাঘাত করবেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, আক্রান্ত হলে তারাও প্রত্যাঘাত করতে তৈরি। তিনি জানিয়েছেন, ''যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী, জঙ্গি হামলা হলে বা কেউ যদি সীমা অতিক্রম করে, তাহলে আমাদের সেনাবাহিনী তার জবাব দেবে।''
বৈরুতে ইসরায়েলের হামলা
বৈরুতে ইসরায়েলের বিমান হামলা অব্যাহত আছে। শুক্রবার সকালেও বৈরুত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে ইসরায়েলের বিমান হামলা হয়েছে বলে লেবাননের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
এর ফলে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানা যায়নি। এছাড়া বৈরুতের দক্ষিণের শহরতলিতেও মধ্যরাতের পর ইসরায়েলের বিমান হামলা হয়েছে। এই জায়গা হিজবুল্লার শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট বলছে, হাসান নাসরাল্লার সম্বাব্য উত্তরাধিকারী হিসাবে যাকে ভাবা হচ্ছে, সেই হাশেম সাফিয়েদ্দিনকে টার্গেট করেছে ইসরায়েল। তবে ইসরায়েলের সেনা এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।
লেবাননে ইসরায়েলের আক্রমণে ২৮জন স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন বলে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা জানিয়েছে। তারা বলেছে, ৩৬টির মতো স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বৈরুতে পাঁচটি হাসপাতাল হয় পুরোপুরি বা আংশিকভাবে খালি করে দেয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের এই সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, যে সব জায়গায় বোমা পড়েছে, সেখান থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা পালিয়ে গেছেন। তাই তারা কাজে আসতে পারছেন না। বৈরুত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকায় তারা ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী পাঠাতে পারেননি।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন ভেঙে ইসরায়েল হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে নিশানা করেছে।
লেবাননের রেড ক্রস জানিয়েছে, তারা যখন একটি হাসপাতাল থেকে আহতদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন সেখানে ইসারেয়েলের বিমান হামলা হয়। তাতে চারজন স্বাস্থ্যকর্মী আহত হন। লেবাননের এক সেনার মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী দক্ষিণ লেবাননের ২০টি শহর খালি করে আবাসিকদের চলে যাওয়ার জন্য বলেছে। এই নিয়ে সবমিলিয়ে ৭০টি এলাকা থেকে আবাসিকদের চলে যেতে বললো ইসরায়েল।
ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, তারা জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল গুতেরেসকে তাদের দেশে ঢুকতে দেবে না। তারা গুতেরেসের ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
এই পরিস্থিতিতে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ''জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল বা জাতিসংঘকে নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হিতে বিপরীত হতে বাধ্য, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে।''
তবে এই বিবৃতিতে ইসরায়েলের নাম নেয়া হয়নি। বলা হয়েছে, ''জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে সব সদস্য দেশের সুসম্পর্ক রাখা উচিত, তাদের এমন কোনো কাজ করা উচিত নয়, যাতে তার পদমর্যাদা ও কাজে আঘাত লাগে।''
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
এসবি/