ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু মধ্যরাতে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৫০ এএম, ১২ অক্টোবর ২০২৪ শনিবার | আপডেট: ১০:০৩ এএম, ১২ অক্টোবর ২০২৪ শনিবার

মা ইলিশ রক্ষায় দেশের সাগর ও নদীগুলোতে মাছ শিকারের ক্ষেত্রে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে যাচ্ছে। 

আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সাগর ও নদীগুলোতে জারি থাকবে এ নিষেধাজ্ঞা। এ সময়ে সাগর ও নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার, মজুত ও পরিবহন দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে। 

বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা করে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে সামনে রেখে এই ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখার পাশাপাশি মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানও বাস্তবায়ন করা হবে। 

ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইতোমধ্যে নৌকাসহ মাছ ধরার সরঞ্জামাদী নিয়ে উপকূলে ফিরেছেন জেলেরা।

আইন অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞা থাকাকালীন ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে দায়ী ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

প্রতি বছর এই সময়ে ডিম ছাড়ার জন্য সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে নদীতে ছুটে আসে মা ইলিশ।

বরিশালের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, আশ্বিন মাসে ৮০ ভাগ ইলিশের পেটে ডিম আসে। শুধু মিঠাপানিতে ডিম ছাড়ার কারণে এ সময় ইলিশ সাগরের নোনাজল ছেড়ে নদীমুখী হয়। পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝাঁকে ঝাঁকে নদীতে আসে ইলিশ। 

তিনি আরও জানান, প্রজনন নিরাপদ করতে তাই প্রতিবছর এই সময়ে ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ বছর ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকবে। অন্য মাছ ধরার অজুহাতে ইলিশ আহরণ ঠেকাতে এই সময়ে জেলেরা নদী বা সমুদ্রে যেতে পারবেন না। 

নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে উত্তরবঙ্গের প্রধান প্রজনন ক্ষেত্র সিরাজগঞ্জেও প্রশাসন বিশেষ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত যমুনা পাড়ের প্রায় ২৫ হাজার জেলের মধ্যে ৫ হাজার ৪০ জনকে দেয়া হবে ২৫ কেজি করে চাল। তবে সহযোগিতার আওতামুক্ত ক্ষুব্ধ জেলেরা বলছে, নিষেধাজ্ঞার সময়ও পেটের দায়ে তাদেরকে জাল নিয়ে নামতে হবে নদীতে।

বরগুনার উপকূলীয় জেলেদের দাবি অবরোধের সময় ভিজিএফ’র চালের সাথে নগদ অর্থ এবং এজিও’র কিস্তি বন্ধ রাখা। তাদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন বঙ্গোপসাগরের অভ্যন্তরে ঢুকে মাছ শিকার করে নিয়ে যায় ভারতীয় জেলেরা।

চাঁদপুরের মতলব, উত্তরে ষাটনল থেকে দক্ষিণে লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার এলাকা অভিযানের আওতায় রয়েছে। জেলেরা যাতে নদীতে নামতে না পারে সেজন্য উদ্বুদ্ধকরণ সভা, ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে চাল বিতরণ,  ট্রাস্কফোর্স গঠনসহ নানা প্রস্তুতি নিয়েছে মৎস্য বিভাগ। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে গত বছরের চেয়ে এবার উৎপাদন বাড়বে বলে মনে করছে মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র।

মেঘনা নদীর লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১শ’ কিলোমিটার মা ইলিশের অভয়াশ্রম। জেলায় জেলের সংখ্যা প্রায় ৯২ হাজার।

এএইচ