সব সম্ভব Gen-Z জীবন জয়ের গল্প
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৫৩ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৪ শনিবার
তরুণ বয়সটা সকল বৃত্ত ভাঙার। অসম্ভব জেনেও সেই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার। কোনো ব্যর্থতাকে ব্যর্থতা মনে না করার। বড় চিন্তা করার। ভালো চিন্তা করার। কারণ সে বিশ্বাস করে, সম্ভবের নির্দিষ্ট কোনো সীমানা নেই। বাংলাদেশের Gen-Z প্রজন্ম বিশ্বাস করে—সব সম্ভব। এমনই শত তরুণের জীবন জয়ের গল্প নিয়ে সংকলন ‘সব সম্ভব’। প্রায় শতাধিক তরুণের জীবন জয়ের গল্প নিয়ে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন প্রকাশ করেছে "সব সম্ভব"।
বইটির নাম ভূমিকা পড়ে প্রশ্ন হতে পারে, কীভাবে বদলে গেল তাদের জীবন? একটি শিক্ষালয়—কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ বদলে দিয়েছে তাদের জীবন। বান্দরবানে লামায় স্কুলটির অবস্থান।
মেধার কোনো জাত নেই পাত নেই। সুযোগ পেলে যে কেউ নিজ গুণে বিকশিত হতে পারে—এই বিশ্বাস নিয়ে ২০০১ সালে বান্দরবানের প্রত্যন্ত এলাকায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ আল বোখারী মহাজাতক গড়ে তোলেন এ বিদ্যাপীঠ। মাত্র সাতজন শিশুকে নিয়ে যাত্রা শুরু। বর্তমানে বাঙালিসহ ২২ জাতির আড়াই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ধ্যানে জ্ঞানে প্রযুক্তিতে আলোকিত মানুষ হয়ে গড়ে উঠছে এখানে।
কারো হয়তো বাবা নেই, কারো মা নেই, কারো দুজনই নেই, আবার কারো বাবা-মা থেকেও আর্থিকভাবে অসহায়, কারো লেখাপড়ার পরিবেশ ছিল না—এমন অবস্থায় এই স্কুলে শিশুরা এসেছে চার কিংবা পাঁচ বছর বয়সে, নয়তো স্কুল জীবনের কোনো না কোনো ধাপে। আবার কেউ কেউ ভর্তি হয়েছে কলেজে।
সেই শিশু বয়সেই তারা পেয়েছে নিয়মিত মেডিটেশন, ইয়োগা, লেখাপড়া, খেলাধুলা, শুদ্ধাচার চর্চার পাশাপাশি ‘জীবনে ১ম’ হওয়ার ভাবনা বা মনছবি। এই স্কুলের ছোট্ট কোনো শিশুকে ‘বড় হয়ে তুমি কী হবে’ জিজ্ঞেস করলে, নিজের নামটা ঠিকমতো বলতে না পারলেও সে বলতে পারে—‘পথম’ (প্রথম) হবো। এই প্রথম হওয়ার মনছবির শক্তিতেই তারা আজ অধিকাংশ পড়ছে দেশের স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাতীয় শিশু-কিশোর কুচকাওয়াজ প্রতিযোগিতায় প্যারেড ও ব্যান্ড বাদনে (২০১৫-২০১৯) টানা পাঁচ বার প্রথম হয়ে সারাদেশে নজর কেড়েছে। এছাড়াও ক্রীড়ানৈপুণ্যে দেশসেরা স্কুল হয়েছে পর পর চার বার (২০১৭-২০২০)।
কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের বলা হয় কোয়ান্টা। অর্থাৎ প্রত্যেকে একটা করে আলোকগুচ্ছ।
এই বই পড়তে গিয়ে একজন পাঠক যেমন জীবন বদলে দেয়ার শতাধিক ঘটনা জানবেন, তেমনি পাবেন আমাদের দেশের প্রান্তিক মানুষের দৈনন্দিন সংগ্রামের বাস্তব চিত্র, তাদের আশা-নিরাশার গল্প। আর ঋণ, তামাক চাষ, মাদক, অবিদ্যা, কুসংস্কার, ডিজিটাল আসক্তির মতো সমাজের নানা অসঙ্গতির খন্ড খন্ড চিত্র। তাদের এই গল্পগুলোর নেপথ্যে উঠে আসবে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের ২৩ বছরের ইতিহাস। কোয়ান্টামমের ইতিহাস। শূন্য থেকে শুরু করার ইতিহাস। অসম্ভবকে সম্ভব করার ইতিহাস।
আসলে তিন দশক আগে সাধারণ মানুষের ভাবনারাজ্যে কোয়ান্টাম যে মানবিক মহাসমাজের বীজ বুনেছিল, তারই ক্রমবিকশিত রূপ এই কোয়ান্টামম এবং এই শিক্ষাঙ্গন। প্রায় চারশো পৃষ্ঠার বইটি দাম রাখা হয়েছে পাঁচশ টাকা। অনলাইনে ও পাওয়া যাচ্ছে।