ঢাকা, রবিবার   ১৩ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২৮ ১৪৩১

‘আ.লীগের করা আইন দিয়েই তাদের বিচার করতে হবে’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:১৫ পিএম, ১৩ অক্টোবর ২০২৪ রবিবার

বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। তাদের করা আইন দিয়েই গণহত্যায় জড়িতদের বিচার করতে হবে। তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে যেন তাদের বঞ্চিত করা না হয়।

রোববার (১৩ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ঢাকা মহানগরী উত্তরের বার্ষিক সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গত সাড়ে ১৭ বছরে এই জাতিকে অনেক জুলুমের শিকার হতে হয়েছে। মুষ্টিমেয় কিছু দুর্বৃত্ত ছাড়া সব মানুষই জুলুমের শিকার হয়েছেন।

তিনি বলেছেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৫ আগস্টে যারা গণহত্যা চালিয়েছে তাদের বিচার আগে করতে হবে। তারা বলত (আওয়ামী লীগ) আইন সবার জন্য সমান। সেই সমান আইনে তাদের বিচারের অধিকার আছে কিনা? তাদের তৈরি করা কালা-কানুনে দ্রুত তাদের বিচার করতে হবে। তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে যেন তাদের মাহরুম (বঞ্চিত) করা না হয়।

এসময় তিনি ২৮ অক্টোবরের কথা স্মরণ করে বলেন, সেদিন লোগি বৈঠা দিয়ে গণতন্ত্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে জবাই করা হয়েছিল। সেদিনই এদেশ পথ হারিয়ে ছিল। সেদিন তারা লাশের উপর উঠে নেচেছিল। লাশ চুরি করতে চেয়েছিল। ২৮ আগস্ট যাদের খুন করা হয়েছে তারা কারও উপর ঢিল ছুড়েনি। তাদের অপরাধ ছিল তারা জামায়াত ইসলামীর সভায় যোগ দিয়েছিল। দীর্ঘ সাড়ে ১৭ বছর পর আবার ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এদেশ পথ ফিরে পেয়েছে।

জামায়াতের আমির বলেন, সাজানো নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় আসে একটি দল। এখন দলের মানুষও তাদের নাম নিতে চায়না। সাড়ে ১৫ বছর দাপটের সঙ্গে ক্ষমতায় ছিল। ক্ষমতায় আসার দুই মাস পরেই ৫৭ জন চৌকস সেনাকর্মকর্তাকে তারা হত্যা করেছিল। সেদিন তাদের পরিবারকেও ছাড় দেওয়া হয়নি। লাশ ড্রেনে ভাসিয়ে দিয়েছিল। এটা নিয়ে করা সেনাবাহিনীর তদন্তের রিপোর্ট সেনাবাহিনী ও জানলো না, সারা বিশ্বের কেউ জানলোনা।

তিনি বলেন, নেপথ্যের নায়ক হুকুমদাতাদের আড়াল করা হয়েছে। তদন্তের নামে জনগণকে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। মিডিয়া হাতের পুতুল, বলির পাঁঠা ছিল। খুনিরাই ক্ষমতায় এসে খুনের রাজত্ব কায়েম করে দুঃশাসন উপহার দিয়েছে। তারা একসঙ্গে সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দিয়েছে, বিডিআরের নাম নিশানা মুছে ফেলেছে। শুধু ক্ষমতার লালসা ফুরানোর জন্য তারা এই কাজ করেছিল। ওই কুখ্যাত দলের নেতা-নেত্রীরা এ কাজ করেছিল।

জামায়াত ইসলামীর আমির বলেন, আশা করি তারা যেন শুদ্ধ হয়ে ফিরে আসে। কিন্তু কয়লা ধুলে তো ময়লা যায় না। কালো কয়লা যতই ধুয়ে পরিষ্কার করেন না কেন আরো চিকচিকে কালো হয়। কালো রংটা আরো ফুটে ওঠে। তাদের অপকর্মের জন্য জাতির কাছে লজ্জিত হয়ে ক্ষমা চাওয়ার একটা পথ তারা রাখতে পারতেন। কিন্তু সেটা না করে তারা শ্রমিকের নামে, বিচার লীগ, দাবি লীগ নামে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। ইদানীং তারা মাশাল্লাহ, জানি না আসল না আর্টিফিশিয়াল দাড়িও রাখা শুরু করেছে। মাথায় টুপিও পরছেন।  

তিনি বলেন, আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠন করতে চাই। সেজন্য আমাদের সীমাহীন মাত্রার ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। ইসলামকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়। ইসলাম এসেছে উদারতা, মহানুভবতা, মানবতার কারণে।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমানের উপস্থিতিতে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বৈষ্যম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ নাসিব হাসান রিয়ানের বাবা মো.গোলাম রাজ্জাক। 

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য আব্দুর রব, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুবারক হোসেন।

 উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা.ফখরুদ্দিন মানিক প্রমুখ।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সম্মেলন সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড.মুহাম্মদ রেজাউল করিম।

এএইচ