ঢাকা, বুধবার   ২৩ অক্টোবর ২০২৪,   কার্তিক ৮ ১৪৩১

নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’য় পরিণত, বাংলাদেশে আঘাতের শঙ্কা কম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:২৬ এএম, ২৩ অক্টোবর ২০২৪ বুধবার

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ক্রমান্বয়ে শক্তি সঞ্চয় করে মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘূর্ণিঝড় 'ডানা'য় রূপ পরিগ্রহ করেছে। গত রাতে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ উঠছিল ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত। সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড় ডানা’র বাংলাদেশের স্থল ভাগে আঘাত করার আশঙ্কা কিছুটা কমে গেছে। 

ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী এম শর্মা জানিয়েছেন, গভীর নিম্নচাপটি গত রাতের দিকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এরপর এটি ধীরে ধীরে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে অতি প্রবল ঝড়ে রূপ নিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার উপকূলের কাছাকাছি আসতে পারে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার ভোররাতের মধ্যে এটি ওড়িশার পুরী ও পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মাঝ দিয়ে উপকূলে উঠে আসতে পারে। 

এতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সুন্দরবন ও আশপাশের এলাকায় পড়তে পারে। 

এদিকে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড় ডানা ওড়িশা রাজ্যের পুরী ও পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মধ্যবর্তী উপকূলের ওপর দিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর থেকে ২৫ অক্টোবর দুপুর ১২টার মধ্যে তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসাবে স্থল ভাগে আঘাত করার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। 

ভারতের আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড়টি পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র প্রভাব পড়তে পারে সে কারণে বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ভারতের পূর্ব রেলের শিয়ালদহ বিভাগ। ডিআরএম দীপক নিগম জানিয়েছেন, ‘ডানা’র প্রভাব পড়তে পারে এই আশঙ্কায় ১৬০টি লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই বেশ কিছু শাখায় বন্ধ থাকবে ট্রেন চলাচল।

পাশাপাশি, শিয়ালদহ ও বারাসত থেকে হাসনাবাদ শাখাতেও বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানিয়েছেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭২৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কি.মি. দক্ষিণ- দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৮০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। 

ঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। 

এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ১ নম্বর (দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। 

এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয় যেতে পারে। 

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় যখন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করবে তখন এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার।

এএইচ