ছাত্রলীগ কর্মকাণ্ড চালালে কঠোর ব্যবস্থা: আইজিপি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:২৪ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২৪ শনিবার
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেছেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কোথাও মিছিল-মিটিং করতে পারবে না। কোথাও মিছিল করলে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ছাত্রলীগ আর কখনো মিছিল-মিটিং করতে পারবে না। তাদেরকে মিছিল-মিটিং করতে দেয়া হবে না। ছাত্রলীগকে ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্রলীগের অপকর্মে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়েছে। তাই ছাত্রলীগ আর কখনো বাংলাদেশে কোথাও একত্রিত হয়ে মিছিল-মিটিং করতে পারবে না। ইতিমধ্যে কয়েকটি জায়গায় খণ্ড খণ্ড মিছিল করেছে। সেসব মিছিল হতে ছাত্রলীগের কয়েক সদস্যকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
ময়নুল ইসলাম বলেন, কতিপয় বিপথগামী সদস্যের জন্য পুলিশ বিভাগ সঠিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে বিতর্কিত ভূমিকায় থাকা ২১ পুলিশ সদস্যকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে। বিপথগামী সকল সদস্যদের আইনের আওতায় আনা হবে। আগামীতে যেন কোনো রাজনৈতিক দল পুলিশ সদস্যদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
অস্ত্র নিয়ে নতুন করে নীতিমালা করা হচ্ছে বলে জানিয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, ‘যাতে বৈধ অস্ত্র আর কোনো নিরীহ মানুষের বুকের ওপর ব্যবহার না হয়। আবু সাঈদ হত্যাসহ জুলাই আন্দোলনে নিহতদের বিচারিক গুরুত্বপূর্ণ মামলাসমূহ বিশেষ অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে।
আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আইজিপি বলেন, ইতিমধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্ত করছে। এ মামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন ঘটনায় পুলিশের কতিপয় বিপথগামী কর্মকর্তা জড়িত ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গণ-অভ্যুত্থানের আগে নেতৃত্ব পর্যায়ের গুটিকয়েক বিপথগামী কর্মকর্তার কারণে পুলিশ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন আইজিপি। তিনি বলেন, ‘এখন আমরা জনগণের আস্থার পুলিশ তৈরি করতে চাই। পুলিশ সুপার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদে ধারাবাহিকভাবে বদলি করা হচ্ছে। এই পদে যারা যোগ্য তাদের আনা হচ্ছে।’
সুধী সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন- জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘অনেক পুলিশ সদস্য অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ না করে কোনো কোনো দলের হয়ে নিজেদের উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে। এক দল ক্ষমতায় এসে বাকি দলকে শোষণ করবে এমন বাংলাদেশ আমরা চাই না।’ বিগত তিনটি সংসদের সব সদস্য ফ্যাসিবাদের দোসর বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম। এর আগে বেলা ১১টার দিকে আইজিপি ময়নুল ইসলাম আবু সাঈদের গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর জাফরপাড়ায় যান। তিনি আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।
এসএস//