গাজায় ত্রাণ কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা, জাতিসংঘের উদ্বেগ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৩১ পিএম, ২৯ অক্টোবর ২০২৪ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৬:৩৪ পিএম, ২৯ অক্টোবর ২০২৪ মঙ্গলবার
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূখণ্ডে জাতিসংঘ ত্রাণ সংস্থার কার্যক্রম নিষিদ্ধের ঘোষণা করেছে তেলআবিব। এতে ইসরায়েয়েলে ওপর ক্ষুব্ধ বিশ্ব সম্প্রদায়।
জাতিসংঘ বলছে, ইসরাইল অনবরত আন্তর্জাতিক নীতি লঙ্ঘন করে গাজা ইস্যুতে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে যাচ্ছে। বেপরোয়া নেতানিয়াহু প্রশাসন যুদ্ধবিরতির সব প্রস্তাবকে উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছে, আরব দেশগুলোর সঙ্গে অবশ্যই যুদ্ধবিরতি চুক্তি হবে, তবে তা ইরান সমর্থিত সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর।
হঠাৎ করেই ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ৮ দশকের পুরানো শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএকে নিষিদ্ধ করেছে ইসরায়েল। সোমবার দেশটির পার্লামেন্ট নেসেটে দুটি বিল পাশ হয়। এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েল বা এর অধিকৃত পশ্চিমতীরে কোনো ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না জাতিসংঘের এ ত্রাণ কার্যক্রম সংস্থাটি। কার্যক্রম সীমিত করতে হবে গাজা উপত্যকায়ও। ৯০ দিনের মধ্যেই ইউএনআরডব্লিউএকে সব কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলতে হবে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় যে করিডোরগুলো দিয়ে সংস্থাটি কার্যক্রম পরিচালনা করতো, সবই এখন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর দখলে। নেসেটে বিল পাশের মধ্য দিয়ে এখন আর ইসরায়েলে বৈধভাবে কার্যক্রম চালাতে পারবে না সংস্থাটি।
পূর্ব জেরুজালেমে তাদের প্রধান কার্যালয়ও বন্ধ করে দেওয়া হবে। অথচ এই সংস্থাটি গাজায় ১৯৪৯ সাল থেকে কাজ করতো। উপত্যকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা এটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে ইসরাইল এটিই প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে, গাজা যেন আর ফিলিস্তিনিদের জন্য বসবাসের উপযোগী না থাকে।
গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের কারণে দেখা দিয়েছে খাবার, পানি আর ওষুধের তীব্র সংকট। এর মধ্যে তেল আবিবের এই ঘোষণায় ভয়াবহ উদ্বেগ জানিয়েছে মুসলিম ও বিশ্ব সম্প্রদায়।
তারা বলছেন, জাতিসংঘের ত্রাণ সরবরাহকারী সংস্থাকে নিষিদ্ধ করা গুরুতর অপরাধ। উদ্বেগ জানিয়েছে খোদ জাতিসংঘও। অন্যদিকে, এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই বিল পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন, কারণ এই সিদ্ধান্তে ঝুঁকিতে পড়বে গাজার লাখ লাখ বাসিন্দা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ইসরায়েল সরকারকে স্পষ্টভাবে বলেছি, এই সিদ্ধান্তে আমরা উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতো গাজাবাসীর জন্য। সংকটের মাঝামাঝি সময়ে এই সংস্থার বিকল্প খোঁজা সম্ভব না। গাজায় ত্রাণ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে, সেটাও কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। এই সিদ্ধান্ত থেকে ইসরায়েল সরে আসবে, এই আশা করছি।
এদিকে, গাজায় অনবরত হামলায় আরও ৭৭ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যেই হিজবুল্লাহ'র নেতা নাঈম কাশেমকে গোষ্ঠীটির নতুন প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এসএস//