ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ঝিনাইদহে এক প্রেমিকের বাড়িতে দুই প্রেমিকার অনশন. অতপর...

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:৪১ পিএম, ৩ নভেম্বর ২০২৪ রবিবার

এক প্রেমিক, দুই প্রেমিকা। তারা দু’জনেই একই সাথে বিয়ের দাবিতে উপস্থিত হলেন প্রেমিকের বাড়িতে। শনিবার রাত থেকে অনশন শুরু করেন তারা। কাকে বিয়ে করবেন এ নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান প্রেমিক। পরে সিদ্ধান্ত নেন দু’জনকেই গ্রহণ করবেন তিনি। 

এমনই ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের গাগান্না গ্রামে। ওই যুবকের বাড়িতে দুই তরুণীর অবস্থানের খবর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

রোববার সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রেমিক শাহীন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গাগান্না গ্রামের ইকরামুল হকের ছেলে। তার বাড়িতে শনিবার রাত ৮টার দিকে বিয়ের দাবিতে উপস্থিত হন পার্শবর্তী হরিণাকুন্ডু উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের ঘোড়াগাছা গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে রুনা খাতুন। 
এমন খবর শুনে সেখানে ছুটে আসেন শাহীনের আরেক প্রেমিকা সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের  মিজানুর রহমানের মেয়ে সাদিয়া খাতুন। 

তারা দু’জনই বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। এক পর্যায়ে দু’জনকেই বিয়ে করতে রাজি হন প্রেমিক শাহীন। কিন্তু সাদিয়া খাতুন একা তার সাথে বিয়ে করার দাবি তোলেন। 

দুই তরুণীর অবস্থানের খবর শুনে চারদিক থেকে লোকজন ভীড় জমায় শাহীনের বাড়িতে। 

প্রতিবেশীরা জানান, দীর্ঘ দু’বছর ধরে রুনা খাতুনের সাথে শাহীনের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। তাদের দুই পরিবার তাদের বিয়েতে রাজি ছিল। কিন্তু শাহীন ধর্ষণ মামলার আসামি হওয়ায় পরে তার পরিবার তাদের বিয়েতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর রুনাকে পরিবার থেকে তার অমতে বিয়ে দিতে গেলে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে শাহীনের বাড়িতে উঠে। 

অন্যদিকে গত দু’মাস হলো সাদিয়া নামে আরেক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে শাহীন। প্রেমিকের বিয়ের কথা শোনার পর সাদিয়াও তার বাড়িতে আসেন বিয়ের দাবিতে। এমন ঘটনায় শাহীন ও তার পরিবারের উপর ক্ষুব্ধ এলাকার লোকজন।

রুনা খাতুন বলেন, ‘শাহিনের সাথে আমার দুই বছরের প্রেমের সম্পর্ক। আমাদের বিয়েতে দুই পরিবারই রাজি ছিল। কিন্তু শাহীন ধর্ষণ মামলায় আসামি হওয়ায় আমার পরিবার আর মেনে নেয়নি। শুক্রবার পরিবার থেকে অন্যত্র বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু আমি শাহিনকে ছাড়া অন্য কারো বিবাহ করবো না। যে কারণে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমি শাহিনের বাড়িতে চলে এসেছি। আমি ওকেই বিয়ে করবো। শাহীন যদি দুজনকেই বিয়ে করে আমার কোন সমস্যা নেই।’

অন্যদিকে প্রেমিকা সাদিয়া খাতুন বলেন, ‘শাহিনের সাথে আমার দুই মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক। এরআগে শাহিন তাকে বিয়ের জন্য তার বাড়িতে আসতে বলে। আমি বাড়ি থেকে তার বাড়িতে আসি। তখন শাহিনের বাড়ির লোকজন ঝামেলা করায় সেদিন বিয়ে হয়নি। শাহিনের বাড়িতে এখন আরেক মেয়ে এসেছে বিয়ের দাবিতে। আমি তো ওকে ভালবাসি। আমাকে বিয়ে করবে বলে কথা দিয়েছে। আমি তার সাথে বিয়ে করতে চাই। দু’জনকে সে কেন বিয়ে করবে?’

এ ব্যাপারে প্রেমিক শাহিন বলেন, ‘আমাকে বিয়ে করতে যে দুই মেয়ে আমার বাড়িতে এসেছে। তাদের সাথে আগে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল, এখন নেই। তবে তারা যেহেতু আমাকে বিয়ে করতে বাড়িতে চলে এসছে আমি তাদের দুই জনকেই বিয়ে করতে রাজি আছি।’

হলিধানী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সন্তোষ কুমার জানান, রাতে সাদিয়া নামের মেয়েটি তার নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। আর রুনা খাতুনকে শাহীন বিয়ে করেছে। ঘটনাটি টক অব দ্য ভিলেজ থেকে টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। 

এএইচ