ফ্লোরিডা ও ক্যারোলিনায় ট্রাম্পের জয়
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৪০ এএম, ৬ নভেম্বর ২০২৪ বুধবার | আপডেট: ০৮:৫০ এএম, ৬ নভেম্বর ২০২৪ বুধবার
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল আসতে শুরু করেছে। টানা তৃতীয়বারের মতো এবারও নিজ অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডায় জয়লাভ করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাউথ ক্যারোলাইনাতে জয়ের পথে তিনি।
ফ্লোরিডায় জয়ের ফলে ৩০টি ইলেক্টোরাল ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি।
এক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ‘ব্যাটেলফিল্ড’ ফ্লোরিডা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিপাবলিকান পার্টির দিকে ঝুঁকছে। ২০১২ সালে বারাক ওবামার পর অঙ্গরাজ্যটিতে ডেমোক্র্যাটরা জিততে পারেনি।
এরই মধ্যে বিভিন্ন বুথফেরত জরিপের ফলও আসতে শুরু করেছে। এর মধ্যে একটিতে এগিয়ে রয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প।
এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প সাউথ ক্যারোলাইনাতে জয় পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অবশ্য এটি প্রত্যাশিত ছিল। কারণ ঐতিহাসিকভাবেই সেখানে রিপাবলিকানরা জিতে আসছে। সাউথ ক্যারোলাইনাকে পালমেটো স্টেট বলা হয়। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি মূল ব্রিটিশ উপনিবেশের একটি। এই রাজ্য সাধারণত রিপাবলিকান পার্টিকেই সমর্থন করে।
এনবিসির জরিপে দেখা যায়, ৫১ শতাংশ ভোটার অর্থনীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ওপরই আস্থা রাখছেন। যেখানে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করছেন ৪৭ শতাংশ ভোটার। এছাড়া, ৭২ শতাংশ ভোটার বলেছেন, তারা দেশের অবস্থা নিয়ে ‘রাগ’ বা ‘অসন্তুষ্ট’। এটিকে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলার জন্য ‘খারাপ লক্ষণ’ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল বলছে, মার্কিন ভোটাররা তাদের ভোট প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোন বিষয়টি বেশি বিবেচনায় নিয়েছে -- এনবিসির বুথফেরত এ জরিপ তার প্রথম ইঙ্গিত।
এদিকে, এপির ভোটকাস্টের তথ্য মতে, মার্কিন ভোটাররা বলেছেন যে, অর্থনীতি এবং অভিবাসনই বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের মূল সমস্যা।
দেশজুড়ে ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি ভোটারের ওপর পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, দেশটি নেতিবাচকতা এবং হতাশার মধ্যে নিমজ্জিত। এ জরিপে আরও দেখা যায়, ১০ জনের মধ্যে 8 জন দেশ পরিচালনা ‘বড় পরিবর্তন’ চান। এর মধ্যে প্রায় এক-চতুর্থাংশ ভোটার আবার বলেছেন, তারা ‘সম্পূর্ণ পরিবর্তন’ চান।
এছাড়া, ১০ জনের মধ্যে ৭ জন ভোটার মনে করেন যুক্তরাষ্ট্র ‘ভুল পথে’ রয়েছে।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে পূর্ব উপকূলের ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যে সবার আগে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। স্থানীয় সময় গতকাল ভোর ৫টা থেকে অঙ্গরাজ্যটির কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এরপর নিউইয়র্ক ও ভার্জিনিয়ায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ। রাত ৭টা থেকে ১১টার মধ্যে দেশটির সব অঙ্গরাজ্যে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে ৬৬ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছিলেন, যা ১৯০০ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো জাতীয় নির্বাচনে সর্বোচ্চ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে অন্তত ২৭০টি পেতে হয়। জনসংখ্যার অনুপাতে দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্যে এই ইলেকটোরাল কলেজ ভোট বরাদ্দ থাকে। ৫০টি অঙ্গরাজ্যের ৪৮টির ক্ষেত্রে নিয়ম হলো—যে প্রার্থী এসব অঙ্গরাজ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটে জয়ী হবেন, সেখানকার সব ইলেকটোরাল কলেজ ভোট তিনিই পাবেন।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, এবারের নির্বাচনের ফলাফল পেতে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে না। তবে ভিন্নমতও আছে। অনেকে আবার বলছেন, নির্বাচনে কে জয়ী হচ্ছেন, তা জানতে কয়েক দিনও লাগতে পারে।
পুরো বিশ্বের উদ্বিগ্ন নজর এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের দিকে। কারণ নির্বাচনের ফলাফল ঠিক করে দেবে মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার ভবিষ্যৎ।
এএইচ