শহিদ নূর হোসেন দিবস আজ, উত্তপ্ত রাজধানী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:০৩ এএম, ১০ নভেম্বর ২০২৪ রবিবার | আপডেট: ০৯:০৭ এএম, ১০ নভেম্বর ২০২৪ রবিবার
আজ ১০ নভেম্বর,‘শহিদ নূর হোসেন দিবস’। ১৯৮৭ সালের এই দিনে তৎকালীন স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকার রাজপথে ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলন’র অংশ হিসেবে একটি মিছিলে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন পুরান ঢাকার বাসিন্দা নূর হোসেন। দিবসটিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে রাজধানী।
শহিদ নূর হোসেন দিবসকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট বা শহীদ নূর হোসেন চত্বরে গণজমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এই প্রথম প্রকাশ্য কর্মসূচি ঘোষণা করলো দলটি।
আওয়ামী লীগের এই কর্মসূচিকে প্রতিহত করতে পাল্টা কর্মসূচির ঘোষণাও দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। রাতেই জিরো পয়েন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ছাত্র-জনতা।
আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টার পোস্ট করা হয়। যাতে লেখা, ‘১০ নভেম্বর আসুন জিরো পয়েন্টে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’। পরে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে অপর এক পোস্টে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে লেখা হয়, ‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, গণতন্ত্র ও সুবিচার প্রতিষ্ঠায় দলে দলে ঢাকায় আসুন।’ পোস্টে বিকাল ৩টায় কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানানো হয়।
এই কর্মসূচি রুখে দিতে রাতেই জিরো পয়েন্টে জড়ো হয় ছাত্র-জনতা। রাত ১১টার দিকে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তারা ‘খুনি কেন বাহিরে, মুগ্ধ কেন কবরে,’ ‘নূর হোসেন দিচ্ছে ডাক, খুনি শেখ হাসিনা নিপাত যাক’—এমন বিভিন্ন স্লোগান দেন। শেখ হাসিনার বিচারের দাবিও তোলেন তারা।
এছাড়া গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পুলিশ তাদের কার্যালয়ের সামনে থেকে সরে যেতে অনুরোধ করে। পরে বিক্ষোভকারীরা অদূরে মুক্তিযোদ্ধা অফিসের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন।
উল্লেখ্য, খালি গায়ে বুকে-পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ ও ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’- এই শ্লোগান ধারণ করে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় তৎকালিন স্বৈরাচার বিরোধী একটি মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন নূর হোসেন। ওই মিছিল লক্ষ্য করে গুলি চালানো হলে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে নূর হোসেনের মহান আত্মত্যাগ তাৎপর্যপূর্ণ ও প্রেরণাদায়ী একটি স্মরণীয় ঘটনা। সেদিন শহিদ নূর হোসেনের তাজা রক্তে রঞ্জিত রাজপথের আন্দোলন নতুন মোড় নেয় এবং তার রক্তদানের মধ্যদিয়ে তৎকালীন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন আরও বেগবান হয়।
পরবর্তী দিনগুলোতে অব্যাহত লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালিন স্বৈরশাসকের পতন ঘটে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
এএইচ