প্রেমে রাজি না হওয়ায় অপহৃত তরুণের মরদেহ উদ্ধার, নারীসহ আটক ৩
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৯:৫৬ এএম, ১২ নভেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার
প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শেরপুরের কলেজছাত্র সুমন মিয়াকে অপহরণের ৭ দিন পর তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১১ নভেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে শেরপুর শহরের সজবরখিলা এলাকা উত্তরা হাসপাতালের কাছে এক পুলিশ সদস্যের বাসার আঙিনার মাটি খুঁড়ে তার (সুমনের) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- শহরের বাগরাকসা এলাকায় বসবাসকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম, তার মেয়ে একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া আন্নি আক্তার (১৯) ও রবিন মিয়া (২০)।
নিহত সুমন মিয়া শহরের কসবা বারাকপাড়া (নিমতলা) এলাকার কৃষক মো. নজরুল ইসলামের ছেলে এবং শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বাড়ি ফেরার পথে সুমন মিয়া শহরের বাগরাকসা কাজীবাড়ি পুকুরপাড় এলাকা থেকে অপহৃত হন।
পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, প্রেমঘটিত সম্পর্কের জের ধরে সুমনকে পরিকল্পিত কৌশলে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ গুমের উদ্দেশে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।
রোববার রাতে সুমনের বাবা নজরুল ইসলাম সদর থানায় মামলা করেন। এজাহারে বাবা-মেয়েসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও দুই থেকে তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই ছাত্রী দুই-তিনজন যুবকের সহায়তায় সুমনকে অপহরণ করে বলে এজহারে উল্লেখ করা হয়।
পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম কলেজছাত্র সুমনের লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটকের পর অপহৃত সুমনকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। পরে আটককৃতদের তথ্যের ভিত্তিতে মাটিচাপা অবস্থায় সুমনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এসপি জানান, রোববার রাতেও মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে সুমনের সর্বশেষ অবস্থান ময়মনসিংহে ছিল বলে জানা যায়। তবে তারপর থেকেই ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সদর থানার ওসি মো. জুবায়দুল আলম বলেন, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। ইতিমধ্যে এজাহারভুক্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
জানা যায়, সুমন মিয়া ও আন্নি আক্তার শেরপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে একইসঙ্গে পড়াশোনা করেন। সেই সুবাদে আন্নি সম্প্রতি সুমনকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সুমন তাতে রাজি না হওয়ায় আন্নি ক্ষুব্ধ হন। এরই জের ধরে গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় আন্নির উপস্থিতিতে ২-৩ জন যুবক জোরপূর্বক সুমনকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যান।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, সুমন ও আন্নির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর মধ্যে আন্নির অন্য জায়গায় বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয় তার পরিবার। এ নিয়েও অঘটন ঘটে থাকতে পারে বলে অনেকের ধারণা।
এএইচ