মেয়ে-জামাতার বিরুদ্ধে অভিযোগ বাবার, পুলিশ গিয়ে পেল মরদেহ
নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:৩৮ এএম, ১২ নভেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার
বসতভিটার ১২ শতক জমি লিখে নিতে চায় মেয়ে ও তার স্বামী। দিতে অস্বীকার করলে মারধর আর নির্যাতনের শিকার হতেন বৃদ্ধবাবা টুরু মিয়া। এ ঘটনায় গত ৭ নভেম্বর ভূক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। আর অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে টুরু মিয়ার মরদেহ দেখতে পায় পুলিশ।
এমনই ঘটনা ঘটেছে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায়। বিষয়টি সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে নিশ্চিত করেন থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ্জাহান আলী।
এর আগে ১০ নভেম্বর বিকাল ৪টায় উপজেলার জাইজাতা গ্রামে পুলিশ গিয়ে তার মরদেহ দেখতে পায়। মরদেহে বুকের ডান পাশে অনেকটা জায়গা জুড়ে কালো জখমের দাগ আর ডান হাতের কবজির উপরে ছিল ধারালো অস্ত্রের চিহ্ন।
পুলিশের ধারণা, মারধরের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই মেয়ে-জামাতাকে আটক করে পুলিশ।
ওসি শাহ্জাহান আলী বলেন, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলার প্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মরদেহের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, বদলগাছী উপজেলার সদর ইউনিয়নের জাইজাতা গ্রামের মৃত আফছার আলী মন্ডলের বড় ছেলে টুরু মিয়া। বয়স প্রায় (৮৫) বছর। যুবক বয়সে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর টুরু মিয়া দ্বিতীয় বিয়ে করেন। প্রথম পক্ষের এক ছেলে সন্তান আছে। বনিবনা না হওয়ায় সে মহাদেবপুর উপজেলায় মাতাজীহাট সংলগ্ন গুচ্ছগ্রামে বসবাস করে। আর দ্বিতীয় পক্ষের দুই কন্যা সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন টুরু মিয়া।
ছেলে সন্তান না থাকায় আব্দুস সালাম নামের এক যুবকের সাথে বড় মেয়ে আঙুরের বিয়ে দিয়ে নিজ বাড়িতে ঘরজামাই রাখে টুরু মিয়া। বেশ ভালোই চলছিলো সংসার। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে বসত বাড়ীর জমি লিখে নিতে চায় মেয়ে-জামাই। বাবা দিতে অস্বীকার করলেই করতো মারধর। মেয়ে-জামাইয়ের নিষ্ঠুর আচরণে বাধ্য হয়ে বৃদ্ধ বয়সে একমুঠো খাবার যোগানের জন্য ভিক্ষা করতেন টুরু মিয়া।
স্থানীয়রা বলছেন, মাঝে মাঝে বৃদ্ধ বাবা টুরু মিয়াকে মারধর করতো তার মেয়ে-জামাই। মারধর করার জন্য এর আগেও বেশ কয়েকবার গ্রামে এবং থানায় শালিস হয়েছিল। কয়েকদিন ভালো থাকার পর আবারও মারধর করা হতো তাকে।
অপরদিকে অভিযুক্তরা থানা হেফাজতে থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এএইচ