ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৪ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ৩০ ১৪৩১

বাসচাপায় নিহত মিমের পরীক্ষার আসনে ফুলের তোড়া-উত্তরপত্র

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১১:০৩ এএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ বুধবার | আপডেট: ১১:০৫ এএম, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ বুধবার

নিহত ফওজিয়া মিম, পরীক্ষার আসনে উত্তরপত্র ও ফুলের তোড়াf

নিহত ফওজিয়া মিম, পরীক্ষার আসনে উত্তরপত্র ও ফুলের তোড়াf

‘আজ মিমহীন আরেকটি চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হলো! তার জন্য বরাদ্দকৃত খাতাটি পড়ে রইলো শেষ অব্দি! যতক্ষণ ডিউটি দিচ্ছি, নিষ্পাপ সেই মুখটি বারবার মনে ভেসে উঠছে। আল্লাহ মিমকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ স্তরে অধিষ্ঠিত করুন।' নিহত পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মায়েশা ফওজিয়া মিমের স্মৃতিচারণে নিজের ফেসবুক ওয়ালে কথাটি লিখেছেন তারই শিক্ষক মোঃ আইয়ুব আলী। 

গত ৩০ অক্টোবরে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় নিহত হয় পরিসংখ্যান বিভাগের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী মায়েশা ফওজিয়া মিম। এর একদিন আগে অর্থাৎ ২৯ অক্টোবর থেকে শুরু হয় তার প্রথমবর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা। প্রথমটিতে অংশগ্রহণ করতে পারলেও দ্বিতীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারিনি তিনি। ঘাতক বাস তার আগেই প্রাণ কেড়ে নেয়। 

মঙ্গলবারে (১২ নভেম্বর) মায়েশা মিমের দ্বিতীয় পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় পরীক্ষার কোর্স ছিল 'হিস্ট্রি অব দ্য ইমার্জেন্স অফ ইনডিপেনডেন্ট বাংলাদেশ'। আগের মতই ছিলো ফওজিয়া মিমের পরীক্ষার আসন বরাদ্দ, তবে ছিলো না সে। রয়েছে তার শূন্যতা। 

পরীক্ষার কক্ষে মিমের আসনটি খালি অবস্থায়, যেখানে তার স্মৃতিতে একটি ফুলের তোড়া ও বরাদ্দকৃত পরীক্ষার উত্তরপত্র ছিল। ফুলের তোড়ায় লেখা ছিলো “মৃত্যু তোমায় কেড়ে নিতে পারে কিন্তু স্মৃতিতে তুমি চিরকাল অমর থাকবে।” 

সহপাঠি ও শিক্ষকেরা তার আসন খালি দেখে বার বার ভেঙে পড়েন। 

নিহত ফওজিয়া মিমের সহপাঠী জাহিদ হাসান একুশে টেলিভিশনকে জানান, তার সাথে পরীক্ষা দিলাম সেদিন। আজ সে নেই, ভাবতে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। মনটা ভারি হয়ে উঠেছে। প্রথম পরীক্ষা সে দিয়েছিল,পরেরটা আর দিতে পারলো না। একটা জীবন্ত প্রদীপ হঠাৎ নিভে গেলো ভাবতেও পারছিনা। পরীক্ষা দিয়েছি আর তার শূন্যতা অনুভব করেছি। মনে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আল্লাহ তাকে ভালো রাখুক। 

মিমের শিক্ষক আহসানুল হক জানান, মিম আমাদের বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলো। আজ মিমের দ্বিতীয় পরীক্ষা ছিলো কিন্তু সে আমাদের মাঝে নেই। তার নিষ্পাপ চেহারাটি বার বার ভেসে উঠছে। সে আমার সন্তানের মত, সন্তান হারানো কষ্টের। পরীক্ষা শেষে আমাদের বিভাগ থেকে তার জন্য মসজিদে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুক।

এএইচ