ঢাকা, বুধবার   ২০ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৬ ১৪৩১

সুশীল সমাজের তোপের মুখে রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসের ডিডি

রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:৫৪ পিএম, ২০ নভেম্বর ২০২৪ বুধবার

অভিযোগ অফিস সময় শুরুর আগেই বিশেষ কিছু ফাইলে সই করে দেন রাজশাহী বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের উপপরিচালক (ডিডি) রোজী খন্দকার। তারপর এসব ফাইলের পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের ছবি তোলার কাজ শুরু হয়। সাধারণ মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এ ঘটনায় সুশীল সমাজের তোপের মুখে পড়েন ওই ডিডি।

অভিযোগ রয়েছে, দালালের মাধ্যমে যেসব ফাইল জমা হয় সেগুলোর কাজই শেষ হয় দ্রুত। কয়েকমাস ধরে চলা এমন অনিয়মের প্রতিবাদে রাস্তায় দাঁড়িয়েছে রাজশাহীর সুশীল সমাজ। 

বুধবার সকালে নগরের শালবাগান বাজারে পাসপোর্ট অফিসের সামনে মানববন্ধন করে এই অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করার দাবি জানানো হয়। 

পরে উপপরিচালক রোজী খন্দকারের সঙ্গে দেখা করে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়ম দূর করতে একমাসের সময় বেঁধে দেন। এই সময়ের মধ্যে নাগরিক ভোগান্তি দূর না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণাও দেন তারা।

‘ভুক্তভোগী রাজশাহীর সাধারণ জনগণ’র ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, ক্যাবের রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা আফজাল হোসেন, রাজশাহী ওয়েব’র সভাপতি আঞ্জুমান আরা লিপি, নারীনেত্রী রোজিটি নাজনীন, সেলিনা বেগম প্রমুখ।

মানববন্ধনে হয়রানির অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগীরা বলেন, দালালের মাধ্যমে আসা বিশেষ ফাইলগুলো সরাসরি দোতলায় উপপরিচালক রোজী খন্দকারের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এসব ফাইলে সই করে দেন। তারপর দোতলাতেই সহকারী পরিচালক এসব ফাইল কম্পিউটারে এন্ট্রি করেন। এরপর দ্রুত সময়ের মধ্যে ফাইলগুলো নিচতলায় চলে আসে। সেখানে ছবি তুলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা বাড়ি ফিরে যান। 

আর যারা দালালকে অতিরিক্ত টাকা না দিয়ে নিজেরাই এসে লাইনে দাঁড়ান, তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিচতলায় লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েই থাকতে হয়। এর ফলে রোজ অসংখ্য মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

এদিকে, মানববন্ধন শেষে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এসব বিষয় নিয়ে উপপরিচালক রোজী খন্দকারের সঙ্গে কথা বলতে তার কক্ষে যান। এ সময় রোজী খন্দকার সব অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি দুর্নীতির প্রমাণ দেখাতে বলেন। 

এছাড়াও জোরপূর্বক অফিসে প্রবেশের অভিযোগ তুলে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ততা দেখান। এ সময় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের তোপের মুখে পড়েন উপ-পরিচালক রোজী খন্দকার। 

এ সময় রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান তাঁকে হুশিয়ার করে বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে সব অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করে নাগরিক ভোগান্তি দূর করা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-পরিচালক রোজী খন্দকার বলেন, পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমতি ছাড়া তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। 

তবে এর আগে তিনি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের বলেন, ঘুষ নেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে এক দিনের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এএইচ