শাহমখদুম মেডিকেলে ছাড়পত্র চাওয়ায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা
রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:২৬ এএম, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ শনিবার
দীর্ঘদিন ধরে নিবন্ধন না পাওয়ায় কারণে ছাড়পত্র চাওয়ায় শিক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর বেসরকারী শাহমখদুম মেডিকেল কলেজে।
শুক্রবার ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
এদের মধ্যে দুজন চিকিৎসা নিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। আহত এক শিক্ষার্থী কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করতে নগরের চন্দ্রিমা থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া দুই শিক্ষার্থী হলেন- ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মুন্না ও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাইমন ইকবাল নিরব। এই দুই শিক্ষাবর্ষের ৪২ জন এমবিবিএস শিক্ষার্থী ভর্তির পর থেকে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) ও বিএমডিসির নিবন্ধন পাচ্ছেন না। ফলে তাদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রতারণা করে তাদের ভর্তি করা হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ।
এ নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ২৩টি মামলাও দায়ের করেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শাহমখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীন, তার ভাই টিটু ও মিঠুসহ ভাড়াটে লোকজন তাদের ওপর হামলা করেছেন।
ঘটনার সময়ের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কলেজের অনুসন্ধান ডেস্কের সামনে বসে আছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীন। কয়েকজন শিক্ষার্থী একটি ছাড়পত্র লিখে নিয়ে গিয়ে তার হাতে দিয়েছেন। এই ছাড়পত্রে সই করে দেওয়ার জন্য তারা অনুরোধ করছেন।
এসময় প্রতারণার মামলা করা এক শিক্ষার্থীকে দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে মনিরুজ্জামান স্বাধীন বলেন, ‘তুমি না মামলা করেছো? তুমি আমার সামনে থেকে সরে যাও।’ ঠিক এই সময় পাশ থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন স্বাধীনের ভাই টিটু।
মামলা করা এক শিক্ষার্থীকে গালি দিয়ে টিটু বলেন, ‘তুই আমাকে জিনিস না? তুই আমাকেও মামলায় আসামি করেছিস কেন?’ এরপরই শিক্ষার্থীদের ধাক্কা দেওয়া শুরু হয়। পরে ধাওয়া দিয়ে ধরে ধরে শিক্ষার্থীদের পেটানো হয়।’
আহত শিক্ষার্থী সোহেলুল হক বলেন, ‘আমরা গিয়ে বলেছিলাম স্যার আমাদের জীবনটা বাঁচান স্যার। তিন বছরেও আপনি কিছু করতে পারেননি। আমরা এনওসি এনেছি। আপনি সাইন করে দেন। এই এনওসিতে তিনি সাইন করলেন না। দুটি গেট বন্ধ করে এলোপাথাড়ি মারা হলো। মেয়েদেরকেও মেরেছে।’
নগরের চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিয়ার রহমান বলেন, ‘কলেজে ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে সেটা বিস্তারিত জানি না। মারধরের অভিযোগে কলেজের এক শিক্ষার্থী থানায় এজাহার দিয়েছেন। সেটা মামলা হিসেবে রেকর্ড করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শাহমখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের সুবিধামত ভিডিও দেখাচ্ছে। তারা যেগুলো করেছেন তার ভিডিও দেখাচ্ছেন না। ফলে আমরাই অপরাধী হয়ে যাচ্ছি। আমরা শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মধ্যেই আছি। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা ভুক্তভোগী হয়েছি, এখনও হচ্ছি।’
এএইচ