দুষ্টচক্র টার্গেট করে তাকে ফাঁসিয়েছে দাবি ডা. সাবরিনার
দিপু সিকদার
প্রকাশিত : ০২:২৩ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ শনিবার
ডা. সাবরিনা হুসেন মিষ্টি। সবার কাছে পরিচিত ডা. সাবরিনা নামে। পেশায় একজন কার্ডিয়াক সার্জন। তবে সামাজিক মাধ্যমে নিজেকে ভিন্ন আঙ্গিকে তুলে ধরতে তার জুড়ি মেলা ভার। ব্যাপকভাবে প্রথম আলোচনায় আসেন করোনাকালে। করোনা সনদ জালিয়াতির মামলায় ৩ বছর জেলও খেটেছেন সাবরিনা। সাময়িক বরখাস্ত করা হয় হদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে।
একুশে টেলিভিশনের কাছে ডা. সাবরিনা দাবি করলেন, একটি দুষ্টচক্র টার্গেট করে তাকে ফাঁসিয়েছে।
ডা. সাবরিনা, পেশায় চিকিৎসক। তবে দেখে মনে হতে পারে সিনে জগতের পড়ন্ত কোন তারকা। আগাগোড়াই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে নানাভাবে উপস্থাপন করতেন তিনি।
যার কারণে মানুষের কাছে সমালোচিত ক্যারেক্টর তিনি। করোনাকালে কোভিডের জাল সার্টিফিকেট বাণিজ্যে দেশজুড়ে আলোচিত-সমালেচিত সাবরিনা।
নমুনা সংগ্রহ না করেই ২৭ হাজার মানুষকে দেয়া হয় রিপোর্ট। এর বেশিরভাগই প্রমাণ হয় ভুয়া বলে। এরপর সাবরিনার স্বামী জেকেজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হন ২০২০ সালের ২৩ জুন। ডা. সাবরিনাকেও একই মামলায় ১২ জুলাই গ্রেফতার করে পুলিশ।
২০২০ সালের ২৩ জুন সিলগালা হয়ে যায় জেকেজি হেলথ কেয়ার নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি।
বাড্ডার কনফিডেন্স টাওয়ারে জেকেজির কার্যালয়ে আর কোন কার্যক্রম হয়নি। সেই ভবনের উপরে যেতে অনুমতি না দিলেও জানানো হয়, সেখানে এখন অন্য একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিস।
করোনা সার্টিমাফিকেট জালিয়াতির মামলায় সাবরিনাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। দণ্ডপ্রাপ্ত হন ডা. সাবরিনা। এছাড়াও বাড্ডা থানায় জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির মামলাও দায়ের করা হয় বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। যে মামলাটি এখনো বিচারাধীন।
সাবরিনার আইনজীবী ব্যারিস্টার সারোয়ার বলেন, “যেহেতু আপিলে আছে, আপিল যখন শুনানী হবে এটা পেন্ডিং পর হিয়ারিং, এটা অনেক সময় লাগবে। অন্য মামলাটি চলমান আছে, সেটায় সে জামিনে আছে।”
কারাবাস শেষে হাইকোর্টের আদেশে জামিনে বের হন সাবরিনা। এবার মুখোমুখি হন একুশে টেলিভিশনের। এত কিছুর পরও তার নেই কোনো অনুশোচনা।
ডা. সাবরিনা বলেন, “তিতুমির কলেজে একটা ক্যাম্প করে সেখানে স্যাম্পেল কালেকশন করতো। স্বাভাবিকভাবেই মাঝেমাঝে দেখতে যেতাম। সেটা দেখতে অনেকেই যেতেন। তার মানে এই না যে ওটা আমি পরিচালনা করছি। ওখানকার চেয়ারম্যান বা সিইও আমি নয়।”
এদিকে ডিবি প্রধান হারুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে জাল করোনা সনদের ব্যবসা করলেও এখন তিনি বলছেন উল্টো।
ডা. সাবরিনা বলেন, “তখনকার পরিস্থিতিটা আমার মনে হয়েছিল একটা সাজানো নাটক। হারুন সাহেব এই নাটকটা প্লে করেছেন নিশ্চিয়ই নিজের ইচ্ছায় নয়। উপর থেকে কোনো মাস্টারমাইন্ড তাকে বলেছেন।”
তারেক প্রতারক রিজেন্ট শাহেদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে ভুয়া জালজালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে এখন তিনি বলছেন শাহেদকে তিনি চিন্তেনই না।
সাবরিনা হোসেন বলেন, “ওই সময় আরেকটা যে মামলা হচ্ছিল রিসেন্টের মামলা। আপনার দু’জন মিলে করেছেন বলে অথচ উনিও কখনও আমাকে চোখে দেখেননি আমিও ওনাকে জীবনে চোখে দেখেনি।”
আইনী পাট চুকিয়ে তিনি আবারও তার আগের জায়গায় ফিরতে পারবেন বলে মনে করেন সাবরিনা।
এএইচ