শপথ অনুষ্ঠানে শি চিন পিংকে চান ট্রাম্প, নজিরবিহীন এ আমন্ত্রণে কী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:২৫ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ শুক্রবার
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংকে জানুয়ারিতে তার শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) ট্রাম্পের মনোনীত প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট ফক্স নিউজ চ্যানেলে একটি সাক্ষাৎকারে এই আমন্ত্রণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি এটিকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার প্রচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেন।
ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস অনুষ্ঠানে লেভিট বলেন, ‘এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি দৃষ্টান্ত, যেখানে তিনি শুধু মিত্র দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গেই নয়, প্রতিপক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গেও খোলামেলা আলোচনার পথ তৈরির চেষ্টা করছেন।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে চীনা নেতার উপস্থিতি হবে নজিরবিহীন ঘটনা। কারণ দুই দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে চলমান শীতল সম্পর্ক দিন দিন জটিল আকার ধারণ করছে।
ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের চীন বিশেষজ্ঞ স্কট কেনেডি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এটি কূটনৈতিক নাট্যমঞ্চ ছাড়া আর কিছুই নয়। যেখানে অন্য রাষ্ট্রপ্রধানেরা, এমনকি শি চিনপিংও, কখনো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শি আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন না। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এ মুহূর্তে এ বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই।
তবে, শি যদি আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন, তবে তাঁর উপস্থিতি নানা জটিল প্রতীকী অর্থ বহন করবে।
ট্রাম্প এবং শি অতীতে বেশ কয়েকবার দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়, ওই সময় উভয় দেশ একে অপরের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে।
কোভিড–১৯ মহামারির সময়ও চীনের বিরুদ্ধে বক্তব্য এবং নভেল করোনাভাইরাসকে বারবার ‘চায়না ভাইরাস’ বলে অভিহিত করার জন্য চীনের বিরাগভাজন হয়েছেন ট্রাম্প।
দ্বিতীয় মেয়াদে চীনের সঙ্গে নতুন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথা বলেছেন ট্রাম্প। বিশেষ করে ফেন্টানিলের (ড্রাগ) ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে। তাঁর আসন্ন প্রশাসনের সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন চীন–বিরোধী অবস্থানের জন্য পরিচিত। এর মধ্যে মার্কো রুবিও অন্যতম।
তবে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ করার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে এক বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমাদের চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে। আমি চমৎকার সম্পর্ক গড়েছি। তবে কোভিড এসে সবকিছুতে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।’
অন্যদিকে, চীনা প্রেসিডেন্ট শি একটি চিঠিতে বলেছেন, আমাদের সংঘাতের পরিবর্তে সংলাপ বেছে নেওয়া উচিত এবং জিরো–সাম গেমের পরিবর্তে সহযোগিতার মাধ্যমে উভয়ের স্বার্থ রক্ষিত হয় এমন পরিস্থিতি তৈরি করা উচিত।
এসএস//